মুখে লাল কাপড় বাঁধা, হাতে পিস্তল, এলোপাথাড়ি বোমাবাজি-গুলি কাঁকিনাড়ায়

প্রকাশিত: ৮:৩৮ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০১৯

দমদম থেকে সকাল ৮.০৫ মিনিটে গ্যালপিং কৃষ্ণনগর লোকালে উঠেছিলেন জয় মুখোপাধ্যায়। কল্যাণীতে তাঁর কর্মস্থল। এক ঘণ্টা পর জগদ্দল স্টেশন পেরিয়ে কাঁকিনাড়া ঢোকার কয়েকশো মিটার আগেই থেমে গেল ট্রেন। জয়বাবু বলেন, ‘‘জোর ব্রেক মেরে ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে গেল ট্রেনটা।” সবাই বলাবলি করতে লাগল, কাঁকিনাড়া স্টেশনে অবরোধ। এর পর অন্য সকলের সঙ্গে ট্রেনেই বসেছিলেন তিনি। এক ঘণ্টা কেটে যায়। অবরোধ ওঠার কোনও নাম গন্ধ নেই!

অনেকেই উশখুশ করছেন দেরি হয়ে যাচ্ছে দেখে। কেউ কেউ ট্রেন থেকে নেমে রেললাইন ধরে স্টেশনের দিকে যাওয়ার চেষ্টাও করছেন। অন্যদের মতো ট্রেন থেকে নেমে পড়েন জয়বাবুও। আর তার পরেই যে ঘটনা ঘটল, জয়বাবুর কথায়, ‘‘এ রকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি যে হতে হবে তা আমি কোনও দিন ভাবিনি।”

ট্রেনে থাকতেই যাত্রীরা দেখছিলেন, লাইনের পূর্বদিকের বস্তি এবং ঝুপড়ি থেকে পিল পিল করে লাইনের ধারে জমায়েত করছে কয়েকশো যুবক। সবার মুখ লাল কাপড়ে ঢাকা। চোখটা খালি দেখা যাচ্ছে। তাদের হাতে তলোয়ার, ভোজালি থেকে শুরু করে লাঠি, রড চাকু। জমায়েতটা দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের কাছে আসতেই শিউরে উঠলেন যাত্রীরা। শুধু ধারালো অস্ত্র নয়, অনেকের হাতেই দেখা যাচ্ছে দেশি পিস্তল!

রীতিমতো আতঙ্কিত হয়েই লাইনে নেমে পড়েন জয়বাবু আরও অনেকের সঙ্গে। তার পরের অভিজ্ঞতা আরও ভয়ঙ্কর। জয়বাবু বলেন, ‘‘নেমে লাইন ধরে হাঁটতে শুরু করতেই আশপাশে বোমার আওয়াজ। খানিকটা দূরে আধাসেনা কিছু যুবককে তাঁড়া করছে লাঠি উঁচিয়ে। তাতে পালানো দূরে থাক পাল্টা বোমা ছুড়ছে ওরা। বালতি বালতি বোমা নিয়ে দৌড়চ্ছে ওই যুবকরা। এলোপাথাড়ি বোমা মারছে। কখনও ট্রেন লক্ষ্য করে, আবার কখনও লাইনের ধারে। কোনও বাছ-বিচার নেই। কানে আসছে গুলির শব্দও।”

এএ/

Comments