চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ৪ দিনে বিএনপির ৬৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১১:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮

একুশনিউজ ডেস্ক : নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ততই বাড়ছে ধরপাকড়। গত ৪ দিনে সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনসহ এই আসনের দুটি থানার ধানের শীষের অন্তত ৬৪ জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

গত সোমবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম নগরীর বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো.জসিম উদ্দিনকে। সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান।

এছাড়া লোহাগাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে লোহাগাড়া সদর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাস্টার আব্দুস সালাম, একই ইউনিয়নের মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম, পুটিবিলা ইউনিয়নের জিল্লুর রহমান ও
চরম্বা ইউনিয়নের মমতাজ উদ্দিনকে। 

এদিন চট্টগ্রাম নগরীর কোর্ট বিল্ডিং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোস্তাক আহমদ সবুজ ও মো. আখতারকে। এর আগে চুনতী ইউনিয়নের বনপুকুর এলাকা থেকে ১, আধুনগর বাজার থেকে ২, পদুয়া থেকে ২ ও সাতগড় থেকে ১ জনকে গায়েবি মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেয়া হয়। 

অন্যদিকে গত শুক্রবার সাতকানিয়া পৌরসভা, মাদার্শাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্বাচনী সভা করার সময় সর্বমোট ৫৩জনকে গ্রেফতার করা হয়।

বর্তমানে গ্রেফতার আতঙ্কে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার বিভিন্ন এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার ছেঁড়া, প্রচার গাড়িতে হামলা করে মাইক ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রে বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আ ন ম শামসুল ইসলামের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জাফর সাদেক। 

বিবৃতি তিনি বলেন, অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ফলে চট্টগ্রাম-১৫ আসন তথা সাতকানিয়া লোহাগাড়ার সংসদ নির্বাচন হুমকির সম্মুখীন। প্রতিনিয়ত নৌকার প্রার্থীর নির্দেশে এলাকায় ধানের শীষের কর্মীদের অপহরণ, আক্রমণ, বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করা এবং প্রচারণায় বাধা প্রদান করা হচ্ছে।

গত ১৫ ডিসেম্বর সাতকানিয়ার মার্দাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দীনের নেতৃত্বে জামায়াত সেক্রেটারি ফরমান সিকদারকে মসজিদ থেকে অপহরণ করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে সাজানো নাটকের মাধ্যমে অস্ত্রমামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দীনের নেতৃত্বে দক্ষিণ রূপকানিয়া এলাকায় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ গণসংযোগ ও মাইকিংয়ে বাধা দেয়া হয়।

একই উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মনজুরের নেতৃত্বে ধানের শীষের কর্মী তারেক হোছাঈনের বাড়িতে সশস্ত্র আক্রমণ চালায়, বাড়িতে অবস্থানরত মহিলাদের নির্যাতন করে এবং তারেককে খোঁজাখুজি করে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। 

অন্যদিকে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার লাগানোর সময় নৌকা মার্কার সন্ত্রাসীরা সাকিবকে অপহরণ করে প্রচণ্ড মারধর করে। পরে আহতাবস্থায় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। চরম্বা ইউনিয়নের ধানের শীষের কর্মী স্থানীয় প্রতিনিধি জসিম মেম্বারের বাড়িতে তল্লাশির নামে হয়রানি করে এবং নৌকা প্রার্থীর পক্ষে হুমকি দিয়ে আসে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

কলাউজানের চেয়ারম্যান ওয়াহিদের নেতৃত্বে ধানের শীষের মাইকিংয়ে বাধা দেয় এবং গাড়ি থেকে মাইক খুলে নিয়ে কর্মীদের মারধর করে পাঠিয়ে দেয় বলেও জানা গেছে।

#এএইচ/একুশনিউজ

Comments