গুলিতে আহত হবার পর প্রথমবারের মতো নিজ দেশে মালালা ইউসুফজাই নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৭:১৫ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০১৮ এস আর : গুলিতে আহত হবার পর প্রথমবারের মতো নিজ দেশ পাকিস্তানে ফিরলেন নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই। ২০ বছর বয়সী মিস ইউসুফজাই পাকিস্তানের তালেবান নিয়ন্ত্রিত একটি অঞ্চলে মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে তার সাহসী ভূমিকার কারণে প্রথম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজরে আসেন। ‘স্পর্শকাতরতা’ বিবেচনা করে তার পাকিস্তান সফরের বিস্তারিত গোপন রাখা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নিরাপত্তার কারণেই মালালার বিস্তারিত সফরসূচি গোপন রেখেছেন পাকিস্তানি কর্মকর্তারা। তবে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মেয়ে মালালা ইউসুফজাইয়ের জন্ম ১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর সোয়াত উপত্যকার মিনগোরাত এলাকায় ১৪ বছর বয়সী মালালা ও তার দুই বান্ধবীকে স্কুলের সামনেই গুলি করে তালেবান জঙ্গিরা। মেয়েদের শিক্ষা বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ করায় মালালার মাথায় গুলি করেছিল তালেবান বন্দুকধারীরা। এখন ২০ বছর বয়সী মালালা সেই নারী শিক্ষার জন্যই কাজ করে চলেছেন। মালালার স্বপ্ন সফল করতে ২০১২ সালের ১০ নভেম্বরকে ‘মালালা দিবস’ ঘোষণা করে জাতিসংঘ। বিভিন্ন দেশে মেয়েদের শিক্ষার সহায়তায় গঠন করেন মালালা ফান্ড। শিশু ও তরুণদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৪ সালে ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান মালালা ইউসুফজাই। মালালা পাকিস্তানে চারদিন অবস্থান করবেন বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়। তবে এ সময়ে মালালা তার নিজ শহর সোয়াতে যাবেন কিনা স্পষ্ট নয়। পর্বতসঙ্কুল এই জায়গাটি পাকিস্তানের প্রত্যন্ত উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। সেখানে তালেবানসহ বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রবল দৌরাত্ম্য রয়েছে। পাকিস্তানের টেলিভিশনে অবশ্য একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যাতে বাবা-মায়ের সাথে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ বেনজির ভুট্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা যাচ্ছে তাকে। এ সময় সেখানে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো। কেন হামলা হয়েছিলো মালালার ওপর? তখন তার বয়স মাত্র ১১। তখনি তালিবান শাসনে তার জীবন কেমন চলছে তা নিয়ে বিবিসি উর্দু সার্ভিসে লেখা শুরু করেন তিনি। নারী শিক্ষা ও জঙ্গিদের নিপীড়ন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন তিনি। তালেবান জঙ্গিরা ২০১২ সালে স্কুল থেকে ফেরার পথে তার মাথায় গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায়। ঐ ঘটনা তাকে বিশ্বজোড়া পরিচিতি এনে দেয়। পাকিস্তানি তালিবানদের মতে ওই সময় তারা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিলো কারণ তারা মনে করে মালালা ‘পশ্চিমা পন্থী’ এবং পশতুন অঞ্চলে তিনি পশ্চিমা সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করছেন। ভয়াবহ ওই হামলার পরে প্রাণে বেঁচে যান মালালা। পরে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা নেন এবং পরিবারের সঙ্গে সেখানেই বসবাস করতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর শিশুদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। পিতা জিয়াউদ্দিনের সাথে শিশুদের জন্য কাজ করতে মিলে গঠন করেন মালালা তহবিল। শিশু ও তরুণদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৪ সালে ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান মালালা ইউসুফজাই। সবচেয়ে কম বয়সে শান্তিতে নোবেল পাওয়া ব্যক্তি তিনি। পাকিস্তান কি এখনো বিপজ্জনক? সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরে পাকিস্তানে এখনো সক্রিয় আছে তালিবান। স্কুল ও কলেজে অনেকগুলো হামলার জন্য তাদেরকেই দায়ী করা হয়। মালালা বহুবারই পাকিস্তানে ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন বিশেষ করে তার এলাকা সোয়াতে- যেটি তার ভাষায় “পৃথিবীতে একটি স্বর্গ”। কিন্তু পাকিস্তান ধর্মীয়ভাবে চরম রক্ষণশীল একটি দেশ। ‘ভয়ডরহীন পরিবেশে প্রত্যেক বালিকা পড়তে ও নেতৃত্ব দিতে পারবে’ এমন বিশ্ব গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন মালালা। বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন তিনি। /সূত্র : বিবিসি Comments SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরকৈলাস সত্যার্থীগুলিতে আহত হবার পর প্রথমবারের মতো নিজ দেশে মালালা ইউসুফজাইজঙ্গিগোষ্ঠীজাতিসংঘজিয়াউদ্দিনেরতালেবাননারী শিক্ষানোবেল শান্তিপাকিস্তানেবিবিসিমালালা ইউসুফজাইমালালা দিবসমিনগোরাতযুক্তরাজ্যেশহীদ খাকান আব্বাসিশিশু অধিকার কর্মীসোয়াত