উইঘুর মুসলিমদের বন্দীশিবির আইন করে বৈধতা দিলো চিন

প্রকাশিত: ৮:১৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লাখ লাখ উইঘুর মুসলিমের লাপাত্তা হয়ে যাওয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের মুখে চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কর্তৃপক্ষ বন্দী শিবিরগুলোকে আইন করে বৈধতা দিয়েছে। চিনের কর্তৃপক্ষ এতদিনে স্বীকার করলো বহু উইঘুর মুসলিমকে বন্দী শিবিরে নিয়ে রাখা হয়েছে।

বলা হচ্ছে, ইসলামি কট্টরবাদ মোকাবেলার অংশ হিসাবে আটক উইঘুরদের আদর্শ শেখানো, তাদের চিন্তা-চেতনায় বদল আনা হচ্ছে। মানবাধিকারের ওপর সম্প্রতি এক বৈঠকে উপস্থিত চিনা কর্মকর্তারা বলছেন ধর্মীয় উগ্রবাদের কবলে পড়া উইঘুরদের নতুন করে ‘শিক্ষা এবং পুনর্বাসনের’ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে কীভাবে তা করা হচ্ছে তা চিনা কর্মকর্তারা ভেঙ্গে বলছেন না।

কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো দাবি করছে, এসব শিবিরে প্রেসিডেন্ট শি জিন-পিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে উইঘুরদের শপথ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। একইসাথে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে আত্মসমালোচনা করানো হচ্ছে।

শিনজিয়াং এ গত কয়েকবছর ধরে অব্যাহত সহিংসতা চলছে। চিন তার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসলামি সন্ত্রাসীদের দায়ী করে। চিন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিলো যে তারা বিপুল সংখ্যক উইঘুর মুসলিমকে কতোগুলো বন্দী শিবিরের ভেতরে আটকে রেখেছে।

গত অাগস্ট মাসে জাতিসংঘের একটি কমিটি জানতে পেরেছে যে ১০ লাখের মতো উইঘুর মুসলিমকে পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে কয়েকটি শিবিরে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

চিন শিনজিয়াংয়ে কি করছে নতুন এই আইনের মাধ্যমে এই প্রথম তার একটি ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আইনে বলা হয়েছে, যে সব আচরণের কারণে বন্দী শিবিরে আটক করা হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে – খাবার ছাড়া অন্য হালাল পণ্য ব্যবহার, রাষ্ট্রীয় টিভি দেখতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় রেডিও শুনতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখা।

চিন বলছে, এসব বন্দী শিবিরে চিনা ভাষা শেখানো হবে, চিনের আইন শেখানো হবে এবং বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

শিনজিয়াংয়ে বিভিন্ন ইসলামি রীতি এবং আচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রচারণা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে খাদ্য ছাড়া বিভিন্ন হালাল পণ্য ব্যবহারের প্রবণতার বিরোধিতা করা হচ্ছে।

উইঘুর মুসলিমরা শিনিজিয়াংয়ের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ। জাতিগতভাবে তারা নিজেদেরকে মধ্য এশিয়ান মনে করে। তাদের ভাষা অনেকটা তুর্কি ভাষার মতো। গত কয়েক দশকে হান চিনারা (চীনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী) শিনজিয়াংয়ে গিয়ে বসতি গেড়েছে যেটা উইঘুররা একেবারেই পছন্দ করেনি। সুত্র: বিবিসি বাংলা।

/আরএ

Comments