ইরানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় আহভাজ শহরে সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজে বন্দুকধারীদের গুলিবর্ষণে অন্তত ২৫ জন নিহত ও ৫৩ জন আহত হয়েছে।

শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় হামলাটি শুরু হয় এবং এতে চার বন্দুকধারী যুক্ত ছিল বলে ইরানি বার্তা সংস্থা ফার্সের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।

প্যারেড প্রাঙ্গণের নিকটবর্তী একটি পার্ক থেকে গুলি করা হামলাকারীদের পরনে সামরিক উর্দি ছিল বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি (আইআরএনএ) জানিয়েছে, ইরাক যুদ্ধের (১৯৮০-৮৮) বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে
খুজেস্তান প্রদেশের আহভাজ শহরে ওই কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল।

হামলাকারীরা প্যারেড প্রাঙ্গণে ঢুকতে না পেরে দূর থেকে গুলি চালায় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা তাসনিম।

নিরাপত্তা বাহিনীকে হামলাকারীদের শনাক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

হামলার পেছনে ‘একটি বিদেশি সরকারের’ সমর্থিত ‘সন্ত্রাসীরা’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।

তিনি বলেছেন, “ইরান আঞ্চলিক সন্ত্রাসের সমর্থকদের ও তাদের প্রভু যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী বলে ধরে নিয়েছে।”

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও কর্মকর্তারা হামলার জন্য সুন্নি জঙ্গি বা আরব জাতীয়তাবাদীদের দায়ী করেছে।

ফার্স টুডে জানিয়েছে, সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কিত আল-আহওয়াজ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা হামলাটি চালিয়ে বলে দাবি করেছেন ইরানের ইসলামিক রেভলুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রামাজান শরিফ।

দেশটির সরকারবিরোধী আরব গোষ্ঠী আহভাজ ন্যাশনাল রেজিসট্যান্স ও জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট, উভয়েই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

হামলাকারীরা বেসামরিকদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের পর মঞ্চে থাকা সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে বলে জানিয়েছে ফার্স।

খুজেস্তানের ডেপুটি গভর্নর আলি হোসেইন হোসেইনজাদেহ জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী দুই বন্দুকধারীকে হত্যা করেছে এবং অপর দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুসহ বেসামরিক এবং রেভলুশনারি গার্ডের ১২ সদস্য রয়েছেন বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।

ইরানের আরব সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিদ্যমান বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য পূর্বে আঞ্চলিক প্রতিদ্বিন্দ্বী সৌদি আরবকে দায়ী করেছিল ইরান।

গত বছরের শেষ দিকে আহভাজে বড় ধরনের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছিল। জীবনযাত্রার মান পড়ে যেতে থাকায় ওই সময় স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল বলে প্রকাশ।

Comments