মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিউয়ের পদত্যাগ নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৯:২২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০১৮ একুশনিউজ : মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিউ বুধবার হঠাৎ করে পদত্যাগ করেছেন বলে তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে । হৃদরোগে আক্রান্ত ৭১ বছর বয়সী থিন কিউ গত কয়েক মাস ধরে বয়সের কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগ হয়ে পড়েছেন । পাঁচ দশক ধরে সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে জিতে দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি (এনএলডি) ক্ষমতায় এলে ২০১৬ সালের ৩০ জুন থিন কিউয়ে রাষ্ট্রপতির শপথ নেন । দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছরের মাথায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করেছেন । আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির কার্যালয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ পদত্যাগের কথা জানায় । সুচির ব্যক্তিগত বাল্যবন্ধু, ঘনিষ্ঠ পরামর্শক এমনকি কখনো কখনো চালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ৭১ বছর বয়সী থিন কিউয়ের এই পদ ছিল অনেকটাই আনুষ্ঠানিক । কারণ তাকে এক ধরনের আনুষ্ঠানিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখা হতো। স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকেই দেশটির কার্যত নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মিয়ানমারে কারো সন্তান অন্য দেশের নাগরিক হলে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে এবং দুই সন্তান বিদেশি হওয়ায় মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী অং সান সুচির দেশটির সর্বোচ্চ পদে বসার কোনো অধিকার ছিল না। তিনি রাষ্ট্রীয় পরামর্শক হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলান। অবশ্য পার্লামেন্টের নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন এবং মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদ সংবিধান অনুযায়ী এখনও রয়েছে সেনাবাহিনীর হাতে। ফলে সেনাবাহিনীকে এড়িয়ে অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ সু চি বা তার সরকারের নেই। ২০১৫ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ক্ষমতায় আসে। এরপর ২০১৬ সালের মার্চ মাসে থিন কিউ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পান। দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছরের মাথায় পদত্যাগ করলেন থিন কিউ । পদত্যাগের ঘোষণায় থিন কিউ বলেন, তিনি বিশ্রাম নিতে চান। স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে কয়েক মাস ধরে থিন কিউয়ের শারীরিক অসুস্থতার কথা প্রচার করা হলেও তাঁর কার্যালয় থেকে এ ধরনের বিষয় অস্বীকার করা হয়েছে। এমন এক সময়ে তাকে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট পদে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে, যখন রাখাইনে সেনা অভিযানে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তোপের মুখে রয়েছে সু চির সরকার । গত অগাস্টে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন সু চি । রাষ্ট্রপতি দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সংবিধানের ৭৩ (বি) ধারা অনুযায়ী, সাত কর্মদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদ পূরণ করতে হবে। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক জেনারেল মিন্ট শোয়ে। তিনি সামরিক বাহিনীর মনোনীত। নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ না নেওয়া পর্যন্ত তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগে পর অং সান সুচি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন এনএলডি মেম্বার, বা এমন একজন যিনি এনএলডি প্রতি নীতিনিষ্ঠ’। সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতন-ধর্ষণের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গার বাস্তুচ্যূত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনায় সারা বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনা মুখে পড়েন অং সান সুচি। সামরিক বাহিনী সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগি করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সুচির দলও এ ঘটনায় কখনো নীরব, কখনো সমর্থন জুগিয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। /এসআর Comments SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: অং সান সুচিআন্তর্জাতিকথিন কিউনোবেলজয়ীন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টিবাংলাদেশবাল্যবন্ধুমানবাধিকারমিয়ানমারমিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিউয়ের পদত্যাগরাষ্ট্রপতিররোহিঙ্গাসামরিক শাসনস্টেট কাউন্সিলরহৃদরোগে আক্রান্ত