জর্জ বুশ সিনিয়র আর নেই নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০১৮ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তার ছেলে জর্জ ওয়াকার বুশ এক বিবৃতিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় সিনিয়র বুশের মৃত্যুর খবর জানান। জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে জন্য নির্বাচনে তিনি ডেমক্রেটিক প্রার্থী বিল ক্লিনটনের কাছে হেরে যান। পরে তার ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০১ সাল থেকে দুই দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সিনিয়র বুশ বেশ আগে থেকেই পার্কিনসনস রোগে ভুগছিলেন। হাঁটার শক্তি হারানোয় তাকে চলাফেরা করতে হত হুইলচেয়ারে, নয়ত বৈদ্যুতিক স্কুটারে। শ্বাসতন্ত্রের জটিলতায় সাম্প্রতিক বছরগুলোকে তাকে বেশ কয়েক দফা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।এ বছর এপ্রিলে এইচ ডব্লিউ বুশের স্ত্রী বারবারা বুশ মারা যান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বৈমানিক জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ ১৯৬৪ সালে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেওয়ার আগে ছিলেন টেক্সাসের একজন তেল ব্যবসায়ী। বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ। স্নায়ু যুদ্ধের শেষ দিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রেন্ট স্কুক্রফ্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস বেকারকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করেছিলেন তিনি। যেখানে সভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সিনিয়র বুশের পররাষ্ট্র নীতিকে আরেকটি বিপদজনক পরীক্ষায় ফেলেছিলেন ইরাকের তৎকালীন শাসক সাদ্দাম হোসেন। সাদ্দাম বাহিনী প্রতিবেশী কুয়েত আক্রমণ করে ধ্বংসযোজ্ঞ শুরু করলে দেশটির সরকার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সাহায্য চায়। এইচ ডব্লিউ বুশ তাতে সাড়া দিয়ে চার লাখের বেশি মার্কিন সেনা কুয়েত পাঠান। তখন তিনি বলেছিলেন, “এটা মেনে নেওয়া যায় না। কুয়েতের উপর এই আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না।” মার্কিন সেনারা ইরাকী বাহিনীকে কুয়েত থেকে বিতাড়িত করে। ওই সময় অনেকেই ভেবেছিলেন সাদ্দামকে উৎখাত করতে বুশ হয়তো বাগদাদ আক্রমণ করবেন। কিন্তু তিনি তা না করে সেনাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। সিনিয়র বুশ ওই সময় কতটা দক্ষ কূটনীতিকের মত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তার প্রমাণ দেয় তার ছেলে ডব্লিউ বুশ। ডব্লিউ বুশের আমলে মার্কিন বাহিনী ইরাক আক্রমণ করে সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাত করে। কিন্তু ওই যুদ্ধে যত মার্কিন সেনা হতাহত হয়েছে এবং যে পরিমাণ সম্পদ ব্যয় হয়েছে তা এত দিতে এসে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। সাদ্দামকে উৎখাতের চেষ্টা না করলেও অফ-ডিউটিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের এক মেরিন সেনাকে হত্যা করায় এইচ ডব্লিউ বুশ পানামা আক্রমণ করে তৎকালীন স্বৈরাশাসক ম্যানুয়েল নোরিয়েগাকে উৎখাত করেন। এজন্য মার্কিন বাহিনী মাত্র চারদিন সময় নেয়। পরে মাদক মামলায় নোরিয়েগাকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ৪০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সঙ্গেও নিরাপদ কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন সিনিয়র বুশ। ১৯৮৯ সালে বেইজিংয়ের তিয়ানানমেন স্কয়ারে বিক্ষোভরতদের উপর চীন সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যদিও একই সঙ্গে তিনি সম্পর্কের চূড়ান্ত বিচ্ছেদও চাননি। আলোচনার মাধ্যমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সংকট সমাধানের পথও তিনিই দেখিয়েছেন। তার ওই পথে অনুসরণ করেই পরে বিল ক্লিনটনের আমলে ‘অসলো চুক্তি’ হয়। /এমএম Comments SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: জর্জ বুশ সিনিয়র আর নেই