চাপ সৃষ্টি করে দাবী আদায় করতে চাচ্ছে ইবি কর্মকর্তারা নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯ ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ সৃষ্টি করে এবং হুঁশিয়ারি প্রদান করে কর্মকর্তারা তাদের ৩ দফা দাবী আদায় করতে চাচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সভায় কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর মোর্শেদুর রহমান বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে এই গাছের নিচে আমরা আর বসে থাকবো না, আমরা ওই প্রশাসন ভবনের নিচ তালায় বসে আন্দোলন কবরো, আপনাদের তিনজনকে অফিসে ঢুকতে দিবো না। তিনি আরো বলেন, আমি আর আপনাদের সাথে কোনো সাক্ষাতে যাবো না। এসময় তার বিরুদ্ধে ভিসিকে প্রাণ নাশের যে অভিযোগ উঠছে তা তিনি নাকচ করে বলেন, আমি জনগনের জন্য রাজনীতি করি, তবে এ কাজ করতে গিয়ে যদি ভিসি কেন তার চেয়ে শক্তিধর কাওকে হুমকি প্রদর্শন দেয়া লাগলে দিবো। তিনি হুঁশিয়ারি প্রদান করে বলেন, যারা এই প্রশাসনের দালালি করবেন, তারা কেউ এডিশনাল এবং কেউ ভারপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। আপনাদেরকে আমরা প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে ধুকতে দিবো না। তারপর যা হয় হবে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে এসব দাবী করে আসতেছেন তাদের ৩ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত উপ-রেজিস্ট্রার বা সমমানদের বেতন স্কেল ৫০ হাজার টাকা (গ্রেড-৪), সহকারী রেজিস্ট্রার বা সমমানদের বেতন স্কেল ৩৫ হাজার ৫ শত টাকা (গ্রেড-৫), অফিস সময়সূচি পূর্বের ন্যায় সকাল ৮ টা হতে দুপুর ২ টা পর্যন্ত নির্ধারণ এবং চাকুরীর বয়সসীমা ৬০ বছরের পরিবর্তে ৬২ বছর বহাল রাখার দাবি করেছেন। একই সঙ্গে দুদিনের ছুটির পরবর্তীতে একদিন ছুটি চান তারা। তবে কর্মঘন্টা কমানোর ব্যাপারে, শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবির প্রেক্ষিতে পূর্বের ন্যায় সপ্তাহে ৬ কার্যদিবস চালু এবং দুপুর ২ টা পর্যন্ত চলবে এমনটা শিক্ষার্থীরা মানতে চায় না। এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, কর্মকর্তাদের কথায় মনে হচ্ছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাধ্যমিক স্কুল বানাতে চায়। উপাচার্য স্যারের কঠোর পরিশ্রমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যখন এক-পা দু-পা করে দ্রুত আন্তর্জাতিকীকরণের পথে এগোচ্ছে সেসময় এসে এধরণের কর্মঘন্টা কমানোর দাবি বড়ই অযৌক্তিক। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের গবেষণার পরিধি কমে যাবে। অথচ এই ভোগান্তির শিকার হচ্ছি আমরা সাধারন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রবীণ শিক্ষক বলেন, বাংলাদেশে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৬ ঘন্টা কর্মঘন্টা নেই। এমন কি অান্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিশেষ করে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম নজির নেই। রাষ্ট্রের বা জাতির মেরুদণ্ড হলো শিক্ষা, আর সেই শিক্ষা গবেষণা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদের ৮ ঘন্টা নয় আরো বেশি সময় চালু থাকা প্রয়োজন। সেখানে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু থাকতে পারেনা। আমার মনে হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের কর্মঘন্টার দাবি থেকে বেড়িয়ে আসা উচিৎ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে তাদের কাজের প্রতি আরো মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, প্রশাসন যেহেতু দাবী মেনে নিয়ে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন করেছে এর পরেও এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা কোন ভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসন যখন নীতিগতভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেয় সেই সিদ্ধান্তের পরে অপেক্ষা করাটায় শ্রেয়। অপর এক শিক্ষক বলেন, প্রশাসন তাদের দুটি দাবী মেনে নেয়ার পরেও কর্মকর্তারা এধরণের আন্দোলন করছেন। এধরণের চাপে ফেলে দাবি আদায় করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, সরকারি বিধিবিধানকে সমুন্নত রেখে কর্মকর্তাদের দাবির প্রতি আমি সম্পূর্ণ সহানুভূতিশীল। চাকরির বয়স ৬২ বছর দাবিটি সিন্ডিকেটে সুপারিশ করা হয়েছে এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরিত হয়েছে। বেতন স্কেলের দাবিটি বাস্তবায়নের জন্য সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত হয়েছে এবং বাস্তবায়নের নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কর্মঘন্টা বাড়ানো এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় অর্জন। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকার হচ্ছে। আমি প্রত্যাশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে। Comments SHARES শিক্ষাঙ্গন বিষয়: