রাগ দমনে জরুরী ৭ পরামর্শ

প্রকাশিত: ৮:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০১৮

ইসলাম ডেস্ক: রাগ বা ক্রোধ মানুষের ক্ষোভের অনুভুতির বহিরপ্রকাশ। যা থেকে সে কখনো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং তার কাছে থাকা কোন ব্যক্তি বা বস্তুর উপর সহিংস প্রভাব ফেলে।

যে কোন মানুষই রাগ অনুভব করতে পারেন। তবে ব্যক্তিভেদে তার প্রকার ও আচরণও বিভিন্ন রকম হয়। কারো রাগ হয় ভারসাম্যপূর্ণ, ফলে তার রাগ তাকে সীমা ও সঠিক অবস্থান থেকে বের করে দেয় না। আর কারো রাগ হয় ভারসাম্যহীন। ফলে সে রাগান্বিত হলে সীমা অতিক্রম করে এবং কখনও মনুষ্যত্ব বিবর্জিত উপায়েও রাগের প্রতিফলন ঘটায় এবং আল্লাহর সীমা অতিক্রম করে অপরের উপর যুলুমও করে বসে। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণেও ইসলামে আছে উত্তম ও কার্যকর সমাধান।

এক্ষেত্রে কুরআন ও হাদিস থেকে নেয়া সাতটি পরামর্শ নিম্নে উল্লেখ্য করা হলো:-

১. প্রথমত ‘তা’আউউয’ তথা ‘আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজিম’ পড়া। অর্থাৎ বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া। কেননা শয়তানই নেতিবাচক ও উত্তেজিত মানবচিত্তের সকল সহিংস আচরণের মূল। আর তা’আউউযের মাঝে আছে আল্লাহর কাছে আশ্রয় ও প্রত্যাগমনের গভীরতম প্রার্থনা। শয়তান যখন শুনে বান্দা আল্লাহর আশ্রয় নিয়েছে, আতঙ্কিত হয়ে পশ্চাদ্ধাবন করতে থাকে।

২. চুপ হয়ে যাওয়া। কেননা রাগের অবস্থায় মানুষের মুখে অনেক অযাচিত কথা আসতে থাকে- যা তার মর্যাদা ও অবস্থানের সাথে যায় না। আর কথা আরও কথা টেনে আনে। এভাবে পরিস্থিতি এমন এক জটিল অবস্থায় গিয়ে পৌঁছে যার শেষটা মোটেও শুভ নয়। রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন রাগান্বিত হয়, সে যেন চুপ হয়ে যায়।” (সহিহ)

৩. হাদিস শরীফে এসেছে, রাগান্বিত ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে যায়। আর বসে থাকলে যেন শুয়ে পড়ে বা ঘুমিয়ে গিয়ে হলেও তার অবস্থার পরিবর্তন করে। এর মাঝে সুপ্ত হিকমত হল, এর মাধ্যমে রাগান্বিত ব্যক্তি কোনো সহিংস কাণ্ড যেমন- কাউকে আঘাত করা, জিনিসপত্র ভাংচুর করা বা দীর্ঘদিনের কোন বন্ধন মুহূর্তে ছিন্ন করার মতো নিন্দনীয় কাজ থেকে নিজেকে ফেরাতে অনেকটা সক্ষম হয়।

৪. প্রিয়তম রাসুল সা. এর অনুপম চরিত্রের অনুসরণ করা। প্রজ্ঞা, সহনশীলতা, রাগ নিয়ন্ত্রণ ও বর্জন ছিল তাঁর অনুপম চরিত্র মাধুরীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

৫. মন্দ পরিণতি ও খারাপ ফলাফলগুলোর কথা স্মরণ করা যা এই রাগের কারণে ঘটতে পারে।

৬. উত্তম রুপে অজু করা। কেননা রাগ হল জ্বলন্ত অঙ্গার যা শয়তান মানুষের অন্তরে জ্বালিয়ে দেয়। আর এটাকে আল্লাহর জিকির ও তাঁর কাছে আশ্রয় নেওয়া ব্যতীত নেভানো যায় না। অজুর পানি রাগের কদর্যতা হৃদয় থেকে ধুয়ে দিয়ে যায়।

৭. নামাযে দাঁড়িয়ে যাওয়া। কেননা নামাযে মানুষের রাগ প্রশমিত হয়ে যায় এবং স্বাভাবিক চিন্তা-বুদ্ধি ফিরে আসে। নামাযের মাঝে আল্লাহ তা’আলা বান্দার জন্য স্বস্তি, আস্থা, স্থিরতা ও নিবিড় প্রশান্তি রেখে দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা আমদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

/এএস

Comments