জবির নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ১৯২১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ৭:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০১৮

ইমরান খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): অবশেষে বহুল প্রতিক্ষিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে।

মঙ্গবার (৯ অক্টোবর) ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের ৯ম অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।

জবিকে একটি পরিপূর্ণ ও অত্যাধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরের জন্য নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ এবং ভূমির উন্নয়নের জন্য ১৯শ ২১ কোটি ৬৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ব্যয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পটি এর আগে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুুুমোদন পেয়েছিলো।

গত ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ সচিবালয়ের ১১৭তম সভায় ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমদি মৌজায় প্রায় ২০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের চূড়ান্ত অনুমোদন করা ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হাসান বলেন, এটা আমাদের পাবার অধিকার ছিলো। আজ আমরা আমাদের সম্পুর্ণ অধিকার পেলাম। তিনি বলেন যতো দ্রুত পারা যায় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু করলে ভালো হবে। এই ব্যাপারে কতৃপক্ষ অবশ্যই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবে।তার দাবি , নিদির্ষ্ট সময় উল্লেখ্য করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করবে প্রশাসন।

২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ২৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে সাত একর জায়গায় একটি ২০ তলা একাডেমিক ভবন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এক হাজার সিটের আবাসিক ছাত্র হলের জন্য ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ শিরোনামের একটি প্রকল্প উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নজরুল ইসলাম।

প্রকল্পের প্রস্তাবনা দেখার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এই ৭ একর, ১০ একর দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার সমাধান হবে না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য খুচরা একটি হল ও একাডেমিক ভবন দিয়ে কাজ হবে না। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে হবে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, ক্যাম্পাস, একাডেমিক ভবন, লাইব্রেরিসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস এমনভাবে করতে যাতে কেউ ঢাকা এলে এই ক্যাম্পাস একবার হলেও ঘুরে যেতে বাধ্য হয়।

এরপর একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরি করে তাঁর কাছে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশের এক বছরের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের এ প্রস্তাবটি আজ একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়।

নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্পটি নিয়ে উপাচার্য় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন , আমাদের যে ভুমি সংকট ছিল সেটা সমাধানের যাত্রা শুরু করলাম। ইদানিংকালে বাংলাদেশে কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে দুইশত একর জমি দেওয়ার নজির নাই। সর্বেচ্চ তিরিশ চল্লিশ একর দেয় । এখন আমরাই সর্বোচ্চ জায়গা এবং প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা পেলাম । এর আগে এত টাকা কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হয়নি। আমাদের আশা পূর্ণ হয়েছে । এখন আমাদের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে

তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পের মধ্যে অত্যাধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্ল্যান অর্ন্তভূক্ত রয়েছে।

জানা যায়, ইতোমধ্য ১ অক্টোবর ২০১৮ থেকে এ প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটির অধীনে ভূমি অধিগ্রহণ, নিচু জমি ভরাট করা, পুকুর খনন, গাছ লাগানো , হল, বিল্ডিং, খেলার মাঠ, টিএসসি ও ডিজাইনের জন্য ৩৫ কোটি টাকার মতে বাজেট। এই প্রজেক্ট আমরা সময়মত সাবমিট করবো । এরপরে এই প্রজেক্টের অধীনে আরেকটা ৫ বছর বা তার বেশী মেয়াদি প্রজেক্ট তৈরি করা হবে। সেই প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সম্পন্ন হবে।

এদিকে প্রকল্পটি একনেকে পাস হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জবি উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি একেএম মনিরুজ্জমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাকী ও জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান দিপু-সহ জবিস্থ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

/আরএ

Comments