চবিতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা’ উদ্বোধন

প্রকাশিত: ৮:৪২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০১৮

নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) নির্মিত হলো মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা’।

বৃহস্পতিবার বিকালে এ ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করছেন চারুকলা ইনিস্টিটিউটের ভাস্কর্য বিভাগের ৪১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সৈয়দ মো. সোহরাব জাহান।

ভাস্কর্য উদ্বোধনকালে চবি উপাচার্য বলেন, অনেকদিন ধরে বিভিন্ন মহলের দাবি ছিল ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ভাস্কর্য নির্মাণ করা। আমাদেরও একটা দায়িত্ব ছিলো মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি ভাস্কর্য নিমার্নের, অবশেষে সাবেক কিছু শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় এটি নিমার্ণ সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরো বলে, মুক্তিযুদ্ধের সময় সবচেয়ে পবিত্রতম স্লোগান ছিলো ‘জয় বাংলা’ তাই এর নাম করণ করা হয়েছে ‘জয়বাংলা’।

জানা যায়,‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্যটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে নির্মাণ করা হয়েছে। ভাস্কর্য নির্মাণ কমিটির সমন্বয়ক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী ও সদস্য সচিব চারুকলা ইনিস্টিটিউটের পরিচালক শায়লা শারমিন।

ভাস্কর্য নির্মাণ কমিটি জানায়, ভাস্কর্যের দুইটি স্তর রয়েছে। এর মধ্যে উপরের অংশে আছে তিনজন সরাসরি মুক্তিযোদ্ধার অবায়ব। যার মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী। এর মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নারী ও পুরুষের প্রত্যক্ষ অংশ গ্রহণ বুঝানো হয়েছে।

নিচের অংশে আছে বর্তমান প্রজম্মের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারন করার বহি:প্রকাশ। এতে দুইজন পাহাড়ী বাঙালীর অবায়ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী বাঙালীদের অংশগ্রহনও তুলে ধরা হয়েছে।

নির্মাতা সোহরাব জাহান একুশ নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, ভাস্কর্যটির নিচের অংশ নির্মানের ক্ষেত্রে লাইফ কাস্টিং মেথড অনুসরণ করা হয়েছে। আর উপরের অংশ সমসাময়িক মাধ্যম ও মেথড অনুসরন করা হয়েছে।

উচ্চতা: ভাস্কর্যটির উচ্চতা বেদী থেকে প্রায় ১৮ ফুট ও প্রস্থ প্রায় ২০ ফুট। এর মধ্যে উপরের স্তরে দুই মুক্তিযোদ্ধার উচ্চতা ১১ ফুট এবং নিচের স্তরে প্রতিটি মানব অবয়ব উচ্চতা লাইফ সাইজ ফুট।

নির্মাণ ব্যয়: প্রথম দিকে ১০ লক্ষ টাকা বাজেট ধরা ছিল। কিন্তু নির্মাণে সর্বশেষ পর্যন্ত এ খরচ বেড়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা হয়েছে বলে জানা যায়।

ভাস্কর্য নির্মানের বিষয়ে নির্মাতা সোহরাব জাহান বলেন, দেশ-বিদেশে অনেক কাজ করলেও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য নির্মান এটাই আমার প্রথম কাজ।

বাংলাদেশের অন্যান্য ভাস্কর্যের চেয়ে এটির আলাদা বৈশিষ্ট্য কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্মিত অন্যান্য ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণ পরোক্ষ ভাবে বুঝানো হয়েছে। তবে এই ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

উদ্বোধনের সময় চবি অনুষদসমূহের ডিন, রেজিস্ট্রার, প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

/আরএ

Comments