জামিনে ছাড়া পেলেন জবি শিক্ষার্থী নড়াইলের সুমন

প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০১৯

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: অবশেষে জেল থেকে ছাড়া পেলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী এহসান হাবিব সুমন।

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে সংঘটিত ছাত্রলীগের সংঘর্ষকে ঘিরে পরদিন পুলিশ কর্তৃক আটককৃত সন্দেহভাজন ৫ জনের মধ্যে সুমন একজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইক রেখে ফেরার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাবন্দি হন সুমন।

সুমন লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানিত প্রক্টর স্যার, মাননীয় ভিসি স্যার আমাদের অভিভাবক। আমরা তাদের সন্তান। আপনাদের এমন এক সন্তান আজ জেলে আটকা আছে যে কিনা কিছু জানতো পর্যন্ত না। আপনাদের এমন এক নিরপরাধ সন্তান জেলে আছে যে কিনা কোনোদিন রাজনীতিটাও করেনি। সংসার আর নিজের জীবনের ঘানি টানতে টানতে সময় পার করেছি। হ্যাঁ, মানছি আপনার কিছু সন্তান অপরাধ করেছে, কিন্তু তার জন্য একটা নিরপরাধ নিরীহ মানুষ ফেঁসে গেলো। যার অপরাধ শুধু একটাই ক্যাম্পাসে বাইক রাখতে এসেছিলো।

চিঠিতে সুমন ১৮ তারিখ ছাত্রলীগের সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে বলেন সেদিন তিনি মিরপুরে অবস্থান করছিলেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বি আর টি এ) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বাইকের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার আনতে। বাইকের রেজিস্ট্রেশন পেপার ও নাম্বার হাতে নিয়ে গ্লোবাল ইন্সুরেন্স থেকে বাইকের ইন্সুরেন্স করান। ১৮ তারিখে সংঘর্ষের সাথে তার কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা যে ছিলো না।

আবেগঘণ চিঠিতে সুমুন আরো লিখেন, অবাক হতে হতে আর কাঁদতে কাঁদতে আমি ক্লান্ত। একজন নিরপরাধ এবং নিরীহ মানুষ হয়েও আমি জেলে বসে আছি। জেলখানায় এসে মায়ের কথা সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে। প্রথম ২ দিন মা মা করে অনেক কেঁদেছি। এখন একটু শক্ত হয়েছি। আমি জানি আমার মা এখনো কাঁদছে। চিঠিতে সুমন উল্লেখ্য করে জেল থেকে মুক্তি পেলে মা ও বোনকে নিয়ে আত্মহত্যা করবে। তার এই চিঠি প্রকাশের পর মুহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

কারাগার থেকে জবি ছাত্রের খোলা চিঠি শিরোনামে একুশ নিউজে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির নজরে পড়ে সুমনের চিঠি। চিঠিটি দেখেই পেয়ে নড়াইল-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি তার জামিনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেন।

অবশেষে রোববার (৩ মার্চ) মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এহসান হাবিব সুমন জামিনে ছাড়া পায়। আজ রোববার কোতোয়ালি থানার ওসি মশিউর রহমান সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে সুমন যদি জড়িত না থাকে তাহলে তার মামলা প্রত্যাহার করা হবে জানিয়েছেন জবি প্রক্টর অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ। সুমনের জামিনে কিছুটা স্বস্তির প্রশ্বাস ফেলেছে নড়াইলের জনতা। তবে তার মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সুমনের এলাকার সাধারণ জনগণ।

উল্লেখ্য, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নওয়া গ্রামের রাবেয়া বেগমের ছেলে এহসান হাবিব সুমন।

সংশ্লিষ্ট খবর
একুশ নিউজে খোলা চিঠি পড়ে জবি শিক্ষার্থীর মুক্তির পদক্ষেপ নিলেন নড়াইলের এমপি কবিরুল

 

/আরএ

Comments