সেহরি না করেই রোজা রাখছে কুবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৯:৩০ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০১৯

খোরশেদ আলম, কুবি: অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ থাকায় খাবার নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া, পার্শ্ববর্তী রেস্তোরা, এমনকি খুপরি খাবার দোকানগুলো বন্ধ থাকায় সেহরি না করেই রোজা রাখতে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিবছর রমজান মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ থাকে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম থাকায় রেস্তোরা মালিকরাও অবকাশের সময়টায় ব্যবসা গুটিয়ে রাখেন। হাতেগোনা যে ক’টি রেস্তোরা চালু থাকে তাতে রীতিমত পাহাড়সম চাপ থাকে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে গেছে ৪টি আবাসিক হলের খাবার ব্যবস্থা। একটি হলে সহকারী বাবুর্চি নিজ উদ্যোগে রান্না করলেও সেখানকার খাবার শিক্ষার্থী সংখ্যার তুলনায় নগণ্য।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, ছোলা-মুড়ি সংগ্রহ করে কোনোমতে ইফতার করা গেলেও সেহরির সময় সিরিয়াল ধরেও খাবার পাওয়া যায় না। ফলে আমাদের অনেককেই না খেয়ে রোজা রাখতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, রোজার সময়ে যারা ক্যাম্পাসে থাকেন তাদের বেশিরভাগই সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার্থী। পড়াশোনার চাপের কারণে নিজ উদ্যোগে রান্না করে খাওয়াও সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। এছাড়া রান্না করার জন্য যে সুবিধা বা ব্যবস্থা রয়েছে তাও অপর্যাপ্ত।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম আহমেদ বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যখন খাবার না পেয়ে না খেয়ে শিক্ষার্থীদের রোজা রাখতে হয় এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর কিছু হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেহেতু রমজানে বন্ধের সময়ও পরীক্ষা নিয়ে থাকে, তাই এই সময় শিক্ষার্থীদের খাবার পাওয়ার নিশ্চয়তাও তাদের দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

একাউন্টি অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রায়হান উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সময় পরীক্ষা থাকাতে আমাদের ক্যাম্পাসে বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে, কিন্তু শিক্ষার্থী কম থাকায় হলের ডাইনিং চলছে না। আবার হলে নিজ উদ্যোগে রান্না করে খাওয়ারও তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের দোকানপাট এসময় বন্ধ থাকাতে অনেকেরই কোটবাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসতে হয়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রশাসন কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া ও হলগুলোর ডাইনিং চালু বাধ্যতামূলক করলে খাবার নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেকটাই হ্রাস পেত।

হলের ডাইনিং চালুর ব্যাপারে জানতে চাইলে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, যেহেতু হলের ডাইনিং শিক্ষার্থীরাই পরিচালনা করে, এক্ষেত্রে বাবুর্চির সাথে আলাপ করে ছাত্ররা যদি চায় তাহলে তারা ডাইনিং চালু করতে পারে।

এমএম/

Comments