ইবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, মধ্যরাতে ককটেল বিস্ফোরণ নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:৪৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯ ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে দলীয় কর্মীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোকের মাসে মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাথে বিদ্রোহী ও পদবঞ্চিত গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতের প্রথম প্রহর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় বিদ্রোহী ও পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতাকর্মীদের হাতে লোহার রড, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। ঘটনার এক পর্যায়ে লালন শাহ হল ও জিয়া হলের সামনে কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। রাত সোয়া ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র উপদেষ্টার মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় দুই গ্রুপের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩জনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, (২৫ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের নেতৃত্বে প্রায় ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী সাদ্দাম হোসেন হলের ২৩৫ নম্বর রুমে যান। গিয়ে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা দরজায় লাথি মারতে থাকলে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের কর্মী মোশাররফ হোসেন নীল রুম থেকে বেরিয়ে আসেন। নীল ও শিমুলকে তারা হুমকি ও মারধর করে বলে অভিযোগ করছে। তারপর নীল হল থেকে বেরিয়ে তার গ্রুপের নেতাকর্মীদের জানালে তারা জিয়া মোড়ে অবস্থান নেয় পরে দু’গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির একপর্যায়ে সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সুমনসহ অন্যান্য কর্মীরা জিয়া মোড় থেকে চলে যান। পরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা জিয়া মোড়ে অবস্থান নিলে বিদ্রোহী ও পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতাকর্মীদের ধাওয়া খেয়ে ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা আতংকিত হয়ে যারযার হলে ভিতরে ঢুকে যায়। তারপর বিভিন্ন হলের সামনে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। আজ সকালেও বিভিন্ন হলের সামনে তারা অবস্থান নেওয়াতে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীদের ভিতর আতংক সৃষ্টি হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে লালন শাহ ও সাদ্দাম হোসেন হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দলীয় ট্রেন্ট এ এসে অবস্থান নেয়। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ ও সহকারী প্রক্টর এস এম নাসিমুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী ও পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পরিবেশ কিছুটা স্বাভাবিক করে দেয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ঘটনাটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। এটাকে পুঁজি করে কিছু অছাত্র ও বহিরাগত ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। আমরা সাংগঠনিকভাবে এর ব্যবস্থা নেবো। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, শোকের মাসে তারা যে এইভাবে হামলা চালিয়েছে সেটা খুবই দুঃখজনক। তারা ছাত্রলীগ দাবি করতেছে তাদের মধ্য অনেকে বহিরাগত,মাদকাসক্ত রয়েছে। আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ তাদের রিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ক্যাম্পাসে যারা বিশেষ করে এই শোকের মাসে বিঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই তারা আর যাই হোক ছাত্রলীগ দাবি করতে পারে না। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্যান্ডিং নির্দেশে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে কোন ক্যাম্পাসে বিঙ্খলা করা যাবে না। সুতরাং যারা বিঙ্খলা সৃষ্টি করছে তারা ছাত্রলীগ দাবি করার কোন অধিকার রাখে না। অভ্যান্তরীণ কিছু ব্যাপার থাকতেই পারে কথাকাটাকাটি,ভুল বোঝাবুঝি এইটা কিন্তু উভয়ই বৈধ ছাত্রের মধ্য করতে পারে। একজন অবৈধ ছাত্র কোন অবস্থাতেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবে না এবং ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে পারবে না।এই মূহুর্তে থেকে যদি কেউ বিঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই তাহলে সে দায়-দায়িত্ব আমরা প্রশাসন নিলাম।ছাত্রলীগ কোন সন্ত্রাসী সংগঠন নয় যে কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই তাদের উপর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন,এই ঘটনার সূত্রপাত কিভাবে হলো তার জন্য খুব শক্তিশালী কমিটির মাধ্যমে কেন এই গুলি ফুটলো,বোমাবাজি হলো,ককটেল বাজি হলো এটা আমরা কমিটির মাধ্যমে সনাক্ত করবো।ক্যাম্পাস থেকে সম্পূর্ণ বহিরাগত মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। Comments SHARES শিক্ষাঙ্গন বিষয়: