কুবির হলে পড়ার টেবিলে ছিঁড়ে পড়লো সিলিং ফ্যান

প্রকাশিত: ৬:৫৭ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০১৯

খোরশেদ আলম, কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সিলিং ফ্যান ছিড়ে পড়েছে শিক্ষার্থীর পড়ার টেবিলে। আজ ৩ মে (শুক্রবার) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ৪০০২ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

ঐ কক্ষে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান নোবেলের টেবিলে ফ্যানটি ছিঁড়ে পড়ে।

জানা যায়, ফ্যানটি প্রায় ২০দিন যাবত চলার সময় তীব্র শব্দ করতো। এই সমস্যা নিয়ে নোবেল ও তার কক্ষে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুর রহমান ভূঁইয়া দু’বার হলের অভিযোগ খাতায় অভিযোগ জানান।

নোবেল বলেন, হল কর্মকর্তা সোহাগ ভাইয়ের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন ফ্যানের কোথায় সমস্যা। যেহেতু ফ্যান নিয়ে আমার তেমন পড়াশোনা নেই বা জ্ঞান নেই তাই আমি তাকে বলি ফ্যান চালালে বিকট শব্দ হয়, আর অভিযোগ দিয়ে আসি। কোনো প্রতিকার পাইনি। আর আজ ফ্যানটি ছিঁড়ে পড়লো।

ফ্যান ছিঁড়ে পড়ার প্রত্যক্ষদর্শী ঐ একই কক্ষের অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, আমি মসজিদ থেকে ফিরে বিছানায় বসেছিলাম। এরই মাঝে নোবেলের টেবিলে চলন্ত ফ্যানটি বিকট শব্দে ছিঁড়ে পড়ে৷ সে সৌভাগ্যবশত ছিলো না, থাকলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।

ফ্যানটি নিয়ে অভিযোগ দেওয়া অন্য শিক্ষার্থী তৌহিদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, অভিযোগের পর একজন ইলেকট্রিশিয়ান এসে ফ্যান দেখে বলেন যে এটা ফ্যানের সমস্যা। আমার কিছু করার নেই। আপনারা হল কর্তৃপক্ষকে বলেন। আমি হল কর্মকর্তা সোহাগ ভাইকে জানালে তিনি বলেন নতুন ফ্যান আসলে ফ্যান পাবেন, আর না হয় নিজেরা ঠিক করুন।

এদিকে অত্র হলের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ রয়েছে হল কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সোহাগের বিরুদ্ধে। গত ৩০ এপ্রিল হলের ৩০৪ নং কক্ষের এক আবাসিক শিক্ষার্থী ঐ কক্ষে ফ্যান নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাকে জানালে তিনি বলেন, ‘এই ফ্যান কে ঠিক করে দিবে? ফ্যান ঠিক করার জন্য আমি চাকরি করি নাকি? আপনি প্রভোস্ট স্যারকে জানান। এটা আমার কাজ না’।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, কর্মকর্তা সোহাগ প্রায়শই শিক্ষার্থীদের সাথে রুঢ় আচরণ করেন। শিক্ষার্থীরা কোনো অভিযোগ জানালে তিনি ‘এটা আমার কাজ না’ বলে এড়িয়ে যান।

এ বিষয়ে হল কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সোহাগ বলেন, ‘আমি এ ধরনের কথা বলি নাই। অভিযোগকারী কথা ঘুরিয়ে বলছে’।

ফ্যান ছিঁড়ে পড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। আজ শুক্রবার, এটি ঠিক করে দিতে আমায় একটু সময় দিতে হবে৷ আমি ইলেকট্রিশিয়ান  পাঠাচ্ছি। তারা এসে ঠিক করে দেবে’।

হল কর্মকর্তার অসদাচরণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অত্র হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, ‘হলের কর্মকর্তা হিসেবে হলের দেখভালের দায়িত্ব তার কাজের আওতায় পড়ে। এসব ব্যাপারে তার অনীহা প্রকাশ করা অনুচিত। আমরা শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধার স্বার্থেই হলের দায়িত্বে আছি’।

ফ্যান ছিঁড়ে পড়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ফ্যান ছিঁড়ে পড়ার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি দ্রুত লোক পাঠাচ্ছি। ওরা ঠিক করে দিবে’।

/আরএ

Comments