জবি ক্যাম্পাসে মাদকের আড্ডা নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:০১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০১৯ জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিত চলছে মাদকসেবিদের আড্ডা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক গ্রহণ। ক্যাম্পাসের একাধিক জায়গা ঘুরে মাদকাসক্তদের মাদক গ্রহণ করতে দেখা গেছে। এসব মাদকাসক্তদের বড় একটি অংশ মাদকের টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন ধরণের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। বাড়ছে ছিনতাই ও চুরির মতো ঘটনা। সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন টাকা পয়সা ছিনতাই করে নিচ্ছে মাদকাসক্ত কিছু শিক্ষার্থী। এমনকি পথচারীকে রাতের অন্ধকারে ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় গেটে ধরে নিয়ে আসে মাদকসেবীরা। সবকিছু কেড়ে নেয়ার পর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এইসব বিষয় সম্পর্কে প্রশাসন জানলেও নেই যথাযথ পদক্ষেপ। মাঝে মাঝে ক্যাম্পাসে অভিযান পরিচালনা করলে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয় মাদকের কারবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক পয়েন্টে মাদকের আড্ডা বসে। এর মধ্যে নতুন ভবনের বেজমেন্ট (জিরো পয়েন্ট) থেকে শুরু করে নজরুল হক হল, ক্যান্টিন, পাটুয়াটুলী গেট, সামাজিক বিজ্ঞান চত্বর, রেভেনাস ক্যান্টিন, নির্মাণাধীন ছাত্রী হল, ২য় গেটের বাসস্ট্যান্ড, লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাদ, পোগোজ স্কুল মাদকসেবীদের আড্ডার অভয়ারণ্য হিসেবে স্থান পেয়েছে। রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ফুটওভার ব্রিজের নাম। অনুসন্ধানে জানা যায় মাদকাসক্তদের একটি বড় অংশই ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকলেও পদ প্রত্যাশি বিভিন্ন নেতাদের ছত্রছায়ায় চলছে মাদকের কারবার। দিনেরবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাখা বাসগুলোতে চলে অবাধে মাদক গ্রহণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটের সামনে এবং মুল গেটের পাশে রাখা বাসগুলোতে কিছু শিক্ষার্থীকে নিয়োমিত সিগারেট ও গাজা সেবন করতে দেখা যায়। সন্ধ্যার পর থেকে চলে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য সেবন। অনুসন্ধানে আরো জানা যায় বাইরের কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ছাত্রদের হাতে মাদক ছড়িয়ে দেয়। মুলত তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট গুলো পরিচালনা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ফুটওভার ব্রিজেও পাওয়া যায় নেশাজাতীয় দব্য। পরিচিত ক্রেতা ছাড়া সবার কাছে এরা মাদক বিক্রি করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীও প্রত্যেক্ষভাবে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা সাধারণ মাদকসেবিদের কাছে মাদকদ্রব্য পৌঁছে দেয়। এতে করে বাড়ছে মাদকসেবির সংখ্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। মাদক ব্যবসায়ী এসব ব্যক্তিদের বেশিরভাগ পুরাণ ঢাকার আশেপাশের বাসিন্দা। এ চক্রের সদস্যরা ধোলাইখাল, সূত্রাপুর, নয়াবাজার, নবাবপুর রোপর্যন্ত , আরমানিটোলা মাঠ, চানখাঁরপুল, কেরানীগঞ্জ, ধুপখোলার আশে পাশে থাকে। প্রয়োজনমতো এরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন বেশ ধরে প্রবেশ করে মাদক পৌঁছে দেয়। মাদক ব্যবসায়ী এসব ব্যক্তি শুধুমাত্র চিহ্নিত মাদকসেবিদের কাছেই মাদকদ্রব্য বিক্রি করে। অপরিচিত কোনো ব্যক্তির কাছে এরা সহজে মাদক বিক্রি করে না। তাদের সাথে মাদকসেবিদের রয়েছে আলাদা সখ্যতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রশাসনের ধারাবাহিক অভিযান না থাকার কারণে মাদকাসক্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদকাসক্তদের কারণে ক্যাম্পাসে নিয়োমিত হয়রানির স্বীকার হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, হল না থাকার কারণে আমরা বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করতে আসি। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত বসে গঁাজার আড্ডা। বিশেষ করে যেসব জায়গায় পড়াশোনা করা যায়, তার পাশেই বসে গাঁজার আসর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জবির সহকারী প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন মাদকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরই কঠোর। কোনো শিক্ষার্থীকে মাদক গ্রহণ করতে দেখা গেলে আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করবো। বাসগুলোতে কোনো শিক্ষার্থীকে দিনের বেলায় মাদক সেবন করতে দেখলে আমাদের জানালে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। /আরএ Comments SHARES শিক্ষাঙ্গন বিষয়: