শিক্ষকদের মানববন্ধন; শিক্ষক-ছাত্রলীগ দ্বন্দ্বে যবিপ্রবি অচল নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯ বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষক-ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বন্দ্বে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ঘটনার সুষ্টু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতি সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগামী ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এসময়ের মধ্যে শিক্ষকদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলা ও ভাংচুরের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিস্কার না করা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩ সদস্যর কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে যবিপ্রবি’র রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীরকে। সদস্য হিসেবে থাকবেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন ও জেলা প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিতহয়। মানববন্ধনে সকল শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে একই ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন। মানববন্ধনে বলা হয় যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুলের অনৈতিক দাবি মেনে না নেয়া, শিক্ষক নেতাকে মুঠোফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার প্রতিবাদ করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে মিথ্যা মামলাকরেছেন। এসময় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদ, সাধারন সম্পাদক ড. নাজমুল হোসেন, প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ দীপক কুমার মণ্ডল, কর্মচারী পরিষদের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম জুয়েল প্রমুখ। ৪০ মিনিট ধরে চলা এ মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা ২০১৯ সালের ক্যালেন্ডারে ইচ্ছাকৃতভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ফুটো করে স্পাইরাল বাইন্ডিংয়ের যে অভিযোগ করেছে, তা ভিত্তিহীন। এ ধরণের কোন ক্যালেন্ডার বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশ করেনি। এছাড়া যাদের নামে মামলা করা হয়েছে ক্যালেন্ডার তৈরির সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকাদারী কাজ নিয়ে শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকির ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শিক্ষকদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। মানববন্ধনে বক্তারা আরো জানান, ১২ জানুয়ারি শিক্ষকদের কর্মসূচিতে হামলা ও ভাংচুরের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিস্কারের দাবিতে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এসময়ের মধ্যে আমাদের দাবি না মানে তাহলে শিক্ষকরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। পরে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন জানান, বাইরে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। একটি বানোয়াট ইস্যু নিয়ে বাইরে থেকে ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে কতিপয় শিক্ষার্থীকে শিক্ষকদের মুখোমুখি করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি যে আল্টিমেটাম দিয়েছে তার জন্য তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন। অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশবিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এখন বাংলাদেশের মধ্যে একটা পর্যায়ে চলে গেছে। এ সময় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অবমাননার অভিযোগে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল গত সোমবার বাদি হয়ে যশোর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপাচার্য ড.আনোয়ার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড.ইকবাল কবির জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে ৫শ’ কোটি ও দশ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে দু’টি মামলা করেছেন। যশোর চিফ জুডিশিয়াল আমলি আদালতের বিচারক মামলা দু’টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যশোর কোতয়ালি থানার ওসিকে। /এসএস Comments SHARES শিক্ষাঙ্গন বিষয়: