ডলার

কমছে ডলারের দাম

প্রকাশিত: ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২২

ডেস্ক রিপোর্ট : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর কমতে শুরু করেছে ডলারের দাম। সোমবার ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘আন্তব্যাংক দর’ হিসেবে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে খুচরা বাজারে ডলারের দামও কমতে শুরু করেছে।

সোমবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউসে ১০৮ থেকে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কেনাবেচা হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে ১১০ থেকে ১১১ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে কেনাবেচা হচ্ছে ডলার। দেশের তফলিসি ব্যাংকে বেচাকেনা চলছে ৯৫ থেকে ৯৬ টাকার মধ্যে।

দেশে ডলার সংকট নিরসনে রিজার্ভ থেকে ডলার ছাড় করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। রিজার্ভ কমে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। অন্যদিকে সম্প্রতি ডলার কারসাজি করে দাম বাড়ানো হয় খোলাবাজারে। এ মার্কেটের সিন্ডিকেটের হাতেই ছিলো ডলারের লাগামহীন দর।

এসব সমস্যা আর সংকট কাটাতে গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় শুরু হয়েছে অভিযান। খোলাবাজারে ডলারের লাগামহীন দাম নিয়ন্ত্রণে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতেও আভিযানিক দলের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ধীরে ধীরে ডলার মজুতের কারসাজি কিছুটা হ্রাস পায়, ডলারপ্রতি প্রায় ১০ টাকা কমে আসে দাম।

রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ আর কেদ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দর বেশ কাজে এসেছে। বাড়তি লাভের আশায় অতিরিক্ত ডলার কেনা থেকে বিরত হন সাধারণ ক্রেতারা। গত কদিনে এক্সচেঞ্জ হাউস এলাকাগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় কমেছে।

একই অবস্থা খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষেত্রেও। তারা বলছেন, এখন ডলারের সরবরাহ বেশি রয়েছে, সে তুলনায় ক্রেতা কম। ফলে দামও কমেছে ডলারের। আগামী দু-একদিনের মধ্যে দাম আরও কমার আভাস এক্সচেঞ্জ হাউস ও খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের।

বর্তমানে ডলার বেচাকেনার জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের ২০০টি এডি শাখা রয়েছে। সম্প্রতি ২৩টি ব্যাংক নতুন ৬৬৬ শাখায় বৈদেশিক মুদ্রা (অনুমোদিত ডিলার বা এডি শাখা) লেনদেনের অনুমতি চেয়েছে। যেখানে ২৩৫টি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের অনুমতি রয়েছে। তবে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের সংখ্যা এর দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। নগদ ডলার কেনাবেচার জন্য মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের ওপরই বেশি নির্ভরশীল গ্রাহকেরা। বিশেষত, প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশি পর্যটকসহ সাধারণ গ্রাহকদের এ নির্ভরতা বেশি।

বাজারে চাহিদা কম থাকায় ডলারের দাম আরও কমতে পারে বলে জানান একাধিক এক্সচেঞ্জ হাউজ ব্যবসায়ী। এ বিষয়ে মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন সিকদার গণমাধ্যমকে বলেন, এখন বাজারে ডলারের সরবরাহের তুলনায় ক্রেতা খুবই কম। ক্রেতা সংকটে বিক্রিও কম। আগামীকাল হয়তো বাজার আরও ডাউন (কমার সম্ভাবনা) হতে পারে। এছাড়া ব্যাংকে অনেক শাখা খোলায় গ্রাহকরা সেখানেও যাচ্ছেন।

এদিকে একাধিক নতুন শাখায় বৈদেশিক মুদ্রা (অনুমোদিত ডিলার বা এডি শাখা) লেনদেনের অনুমতি চেয়েছে ২৩টি ব্যাংক। ডলার সংকট মোকাবিলা ও মানি এক্সচেঞ্জের দৌরাত্ম্য কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর এ আবেদন করে ব্যাংগুলো। এর আগে দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে এলাকভিত্তিক তালিকা চেয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি মাসের ১৭ আগস্ট সময় পর্যন্ত মোট ২৩টি ব্যাংক আবেদন করেছে। এসব ব্যাংকগুলোর শাখার পরিমাণ ৬৬৬টি।

বেশি ডলার সংরক্ষণ করে বেশি বিক্রি করার প্রমাণ পাওয়ায় গত ৮ আগস্ট দেশি-বিদেশি ৬টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ করতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

এছাড়া ডলারের কারসাজি রোধে পাঁচ মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।একইসাথে ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। আর ৯টি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে। যারা এতোদিনে লাইসেন্স না নিয়েই ব্যবসা করে আসছিল।

/আরএফ/একুশডেস্ক/

Comments