ডাকসু নির্বাচন: গঠনতন্ত্র সংশোধনে ছাত্রদলের ৮ দফা নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৫:৫৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯ ঢাবি প্রতিবেদক: দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আসন্ন এ নির্বাচনের জন্য গঠনতন্ত্র সংশোধন ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৮ দফা দাবি পেশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গতকাল সোমবার দুপুরে গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের কাছে লিখিত আকারে দাবিগুলো তুলে ধরেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আল মেহেদি তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকি। পরে সন্ধ্যায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন ঢাবি ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ। ছাত্রদলের আট দফা দাবিগুলো হলো: ১. পরিবেশ পরিষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টি ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বশর্ত হিসেবে গঠনতন্ত্রে সংযোজন করতে হবে। ২.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রী, যারা ভোটার হওয়ার উপযুক্ত বলে গণ্য হবে, তাদের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতামূলক বিদ্যমান ধারা সংশোধন করে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। ৩.হলগুলোতে ভোট গ্রহনের পরিবর্তে ডাকসু ও হল সংসদের ভোট কেন্দ্রীয়ভাবে কলা ভবন ও কার্জন হলে গ্রহনের ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. স্বচ্ছ-সুষ্ঠু ও নিরাপদ ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ভোট গ্রহনের সকল প্রক্রিয়া (ভোট গ্রহনের গোপন বুথ ব্যতিরেকে) এবং সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে। ৫.ডাকসু নির্বাচন স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সকল ছাত্র সংগঠনের কাছে গ্রহনযোগ্য শিক্ষকদের সমন্বয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ৬.ডাকসু গঠনতন্ত্রে সন্নিবেশিত ৫(২)-এর অগণতান্ত্রিক ধারা সংশোধন করে ছাত্র সংসদ বিলুপ্তি অথবা কার্যক্রম স্থগিত করার ক্ষেত্রে সভাপতি ও ছাত্র সংসদের যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহনের বিষয়টি সংযোজন করতে হবে। ৭.ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তাফসিল ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলো কোনো প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের কোন প্রকার হয়রানি, মামলা দেওয়া অথবা গ্রেফতার না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ৮.সদস্য পদের ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের ডাকসু গঠনতন্ত্র বাতিলকৃত ৪ অনুচ্ছেদের ২, ৩, ও ৪ ধারা পুনরায় সংযোজন করতে হবে। প্রসঙ্গ, ডাকসুর গঠনতন্ত্রের যে সকল ধারা নিয়ে ছাত্রদলের আপত্তি সেগুলো হল:৪ ধারার ২ উপধারা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মিত শিক্ষার্থীরাও ডাকসুর সদস্য হতে পারবেন, তবে এক্ষেত্রে তাঁদের ডাকসু কর্তৃক নির্ধারিত নিবন্ধন ফি দিতে হবে। ৪ ধারার ৩ ও ৪ উপধারা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদেরও নিবন্ধন ফি’র বিনিময়ে ডাকসুর সদস্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের ডাকসু নির্বাচনের সময় গঠনতন্ত্রের ৪ নং অনুচ্ছেদের ২, ৩ ও ৪ ধারা বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে বাতিলকৃত এ সকল ধারার পুনরায় সংযোজন চায় ছাত্রদল। গঠনতন্ত্রের ৫ ধারার ২ উপধারা অনুযায়ী সভাপতি (পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি) যেকোনো সময় নির্বাহী কোনো সদস্যকে বরখাস্ত করতে পারেন, এমনকি নির্বাহী কমিটিও বাতিল করতে পারেন। ছাত্রদল এ ধারাকে(৫ এর ২) বলছে অগনতান্ত্রিক। কারণ, এ ধারার মাধ্যমে সভাপতির ক্ষমতার অপব্যবহার সম্ভব। সংবাদ সম্মেলন থেকে ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের পাশাপাশি অতিসত্বর বিতর্কিত ধারাসমূহ সংশোধনের দাবি জানান তারা। এসময় সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক ছাড়াও সিনিয়র সহ-সভাপতি তানভীর রেজা রুবেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানজিল হাসান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, হাসানুর রহমান হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। /এসএস Comments SHARES শিক্ষাঙ্গন বিষয়: