মি-টু আন্দোলন; ঝড় আসুক বাংলাদেশেও! নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:১৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০১৮ কে এম আতিকুর রহমান ভারতের বলিউড বা সিনেমা পাড়ার হ্যাশট্যাগ অনলাইন আন্দোলন নিয়ে চলছে তোলপাড়। অফলাইনেও ছড়িয়ে পড়েছে এ আন্দোলন। বিস্তৃতি ঘটেছে ইউরোপ আমেরিকাতেও। বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়ও এ সংক্রান্ত খবর প্রচার হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। প্রথমে বিষয়টি সম্পর্কে একটু জেনে নেয়া যাক- টুইটারে হ্যাশট্যাগসহ ইংরেজিতে ‘মি টু’ নামে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে, যেটার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘আমিও’। ছোট দুটি শব্দ ‘মি টু’, এই শব্দ দুটিই এখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে সামাজিক মাধ্যমে জোরালো আওয়াজ তুলতে হ্যাশট্যাগ ‘মি টু’ লেখার সর্বপ্রথম আহ্বান জানিয়েছেন আমেরিকান অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানো। এরপর থেকেই টুইটার ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে এই হ্যাশ ট্যাগ আন্দোলন শুরু হয়েছে। আলিশা মিলানো নামের ওই অভিনেত্রী ফেসবুকে লিখেন, ‘আপনি যদি যদি নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে ‘মি টু’ লিখে টুইট করুন।’ তাঁর এই পোস্টটিতে ১০ হাজার মানুষ সাড়া দিয়েছেন। অনেকেই ‘মি টু’ লিখে কমেন্টও করেছেন। একাধিক তারকাকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত হলিউড প্রযোজক হার্ভে ওয়েইনস্টেনের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে ‘মি টু’ হ্যাশট্যাগে ব্যাপক সাড়া জাগে। মূলত নিউ ইয়র্ক টাইমসে ৫ অক্টোবর হলিউড প্রযোজক হার্ভে ওয়িন্সটিনের যৌন হয়রানি নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের বাজে অভিজ্ঞতা শেয়ার করার প্রচলন ঘটে। টুইটার কর্তৃপক্ষ এই আন্দোলনটি যেন আরো ছড়িয়ে যায় সেকারণে এটিকে বুস্ট আপ অপশনের আওতায় এনেছে। টুইটার প্রধান জ্যাক ডোরসি বলেছেন, এমন একটি বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পেরে আমরা গর্বিত। কবি ও লেখক নাজোয়া যেবিয়ান হ্যাশট্যাগ ‘মি টু’ লিখে লিখেছেন, ‘আমাকে এটার জন্য দায়ী করা হয়েছে, আমাকে বলা হয়েছে এসব খারাপ না, এই অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতেও মানা করা হয়েছে।’ যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিরা শুধু ‘মি টু’ লিখেই ক্ষান্ত হননি, তাদের অনেকেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, কোন বয়সে নিপীড়নের স্বীকার হয়েছিলেন এবং কাদের মাধ্যমে হয়েছিলেন সেসব বর্ণনাও লিখেছেন তাঁদের স্ট্যাটাসে। আমেরিকা থেকে এই প্রচারণা বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে ভারত ও পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। ‘মি টু’ লিখে যৌন নিগ্রহের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নারীরা। যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘মি টু’ বা ‘আমিও’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে পরস্পর অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন নারীরা। ফেসবুক-টুইটারজুড়ে রবিবার সারাদিন এই ‘মি টু’ হ্যাশট্যাগের প্রচার চলেছে। এখানে লক্ষনীয় বিষয় হলো হ্যারেজমেন্টের শিকার নারীরা কিন্তু একটি বিশেষ শ্রেণীপেশার সাথে জড়িত। আমাদের দেশের পত্রিকাগুলো দুইটি পাতা প্রতিদিন গুরুত্ত্ব সহকারে বরাদ্দ রেখে যাদের অর্ধনগ্ন ছবি ছাপেন সেই বিনোদন পাড়ার ঘটনাই এসব। সিনেমা, নাটক, নাচ-গান, মডেলিং, সুন্দরী প্রতিযোগিতা ইত্যাদি যেসব ইভেন্টগুলোকে আলেম-ওলামাগণ সবসময়ই চরিত্র বিধ্বংসী সাংস্কৃতিক নষ্টামির আখড়া হিসেবে উল্লেখ করে এসব বন্ধের দাবী জানিয়ে আসছেন। এবারে মি-টু আন্দোলন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আসলে কথিত সুপারস্টার এবং চোখ ধাধানো আলোর পেছনে কত কুৎসিত মানুষের বসবাস। এটিও সত্য যে, রুপ-সৌন্দর্য্য এবং সেক্স যেখানে মুখ্য, সেখানে ভাল চরিত্রের মানুষ আশা করাও বোকামী। আমাদের দেশের চলচ্চিত্র ও শোবিজ অঙ্গনের মানুষও কতটা সচ্চরত্রিবান, তাও মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাচ্ছে। মাঝে মাঝে দু-চারটা ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশ হলেও অধিকাংশ অসামাজিক কাজের খতিয়ান অজানাই থেকে যায়। তাই এই আন্দোলনে বাংলাদেশ-এর নারীদেরও নামতে বোধহয় বেশি দেরী নেই। আশা করবো খুব শীঘ্রই আমরাও জানতে পারবো আমাদের শোবিজ তারকাদের চরিত্রের অন্ধকার দিক। এর পেছনে কারা মদদ দেয়, কারা আমাদের সরলমনা তরুনীদের স্টার বানানোর নামে দেহ নিয়ে বাণিজ্যে মেতে ওঠে। সমাজের কোন্ কোন্ বিত্তবান বা সেলিব্রেটি মুখোশের আড়ালে রঙ্গিন দুনিয়ার এই বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, তাও জনগণ প্রত্যক্ষ করুক। অপসংস্কৃতির বিষবাষ্প থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে ওদের চেহারাগুলো জাতির সামনে পরিষ্কার হওয়া জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে। সেইসাথে এসব অন্ধকার জগতের সেলিব্রেটি বাসিন্দা হতে কোন বাবা-মা যেন ছেলে-মেয়েকে না পাঠান, সেই অনুভুতি জাগ্রত হওয়াও খুব প্রয়োজন। একটি সুস্থ্য সমাজ বিনির্মাণে অশ্লিলতাপূর্ণ, সেক্সনির্ভর কোন ইন্ডাস্ট্রী প্রয়োজন আছে কিনা সেটি ভেবে দেখা সময়ের দাবী হয়ে দাড়িয়েছে। এমনকি এসব ইন্ডাস্ট্রীতে জনগণের কষ্টের টাকা থেকে সরকারী অনুদান দেয়া কতটুকু যৌক্তিক ও কল্যাণণকর তাও ভেবে দেখার সময় করে দিয়েছে এই হেস (#) ট্যাগ আন্দোলন। তাই সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে দেশের যৌননিপীড়িত নারীদের এই আন্দোলনে শীঘ্রই অনলাইনে সোচ্চার হওয়ার অপেক্ষা করছি। /আরএ Comments SHARES বিনোদন বিষয়: bikashnewsdj bikash songekushey newsekushey news Bangladeshekushey news bdekushey news liveekushey news onlineekushey tv job news presenterekushey tv news archiveekushey tv news presenterekushey tv news todayekushey tv news videoekushnewsmeemeetootooমি টুমি-টু আন্দোলন; ঝড় আসুক বাংলাদেশেও!