চিত্রালী পাঠক-পাঠিকা চলচ্চিত্র সংসদ’র নতুন কমিটি; সভাপতি মহি-সম্পাদক কাশেম

প্রকাশিত: ৪:০৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০১৮

আফসার হোসেন তূর্য, ভৈরব: সরকারের কাছ থেকে ব্যক্তি মালিকানায় হস্থান্তর করার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘চিত্রালী পাঠক-পাঠিকা চলচ্চিত্র সংসদ’ এর নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে।

সম্প্রতি ফকির মহিউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও আবুল কাশেম আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও গঠন করা হয়।

চিত্রালী পাঠক-পাঠিকা চলচ্চিত্র সংসদ (চিপাচস)। ১৯৭৬ সালের ২৪ অক্টোবর, এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হবার পর এদেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনে যোগ হয় এক ভিন্ন মাত্রা।

বিনোদন সাংবাদিকতায় নতুন মাত্রা সংযোজনকারী এ, টি, এম, হাই (উত্তরদা)-এঁর উদ্যোগে এবং নিয়মিত চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার পথিকৃৎ, চিত্রালীর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এস, এম, পারভেজ-এঁর পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত এই সংগঠনটি সারা বাংলাদেশের জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়ে।

গতানুগতিক চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের বাইরে বেরিয়ে চিপাচস দেশীয় চলচ্চিত্র নিয়ে মুক্তালোচনা, সেমিনারসহ ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ মুক্তাঙ্গনে। দূতাবাস মিলনায়তন থেকে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন বেরিয়ে আসে সাধারণ মানুষের কাছে। ‘রুখতে হবে স্বাধীন মাটিতে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন’ এই আদর্শকে সামনে রেখে চিপাচস মিছিল, জনসভাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে থাকে।

চিত্রালীসহ অবজারভার প্রকাশনা সরকারের কাছ থেকে ব্যক্তি মালিকানায় হস্থান্তর করার পর, মালিক পক্ষ্য এই সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এরপর বেশ ক’বার চিপাচস-এর বিভিন্ন কর্মকর্তা বিচ্ছিন্নভাবে উদ্যোগ নিলেও তা বেশীদুর এগিয়ে নিতে পারেননি।

গত ২৪ অক্টোবর ২০১৮, চিত্রালী পাঠক-পাঠিকা চলচ্চিত্র সংসদ (চিপাচস)-এর ৪২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিভিন্ন শাখা কমিটির সাবেক কর্মকর্তা ও সদস্যরা এক পূনর্মিলনী সভায় মিলিত হন। উপস্থিত সদস্যরা সে সময়ের বিভিন্ন কার্যক্রম বর্ণনা করেন ও চিত্রালী ব্যাতিরেকেই এই সংগঠনকে সক্রিয় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এসময়ে চিপাচস-এর সাবেক সভাপতি চাষী সিরাজুল ইসলাম সংগঠনের মূল গঠনতন্ত্র উপস্থিত করে জানান, সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে থাকা শাখাসমূহের ভিত্তিতে এই গঠনতন্ত্র তৈর করা হয়েছিল।

চিত্রালী অবলুপ্ত হওয়ায় এখন আর শাখা কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কমিটি বিষয়টি বদলে চিপাচস-এর মূল কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এসময়ে প্রাক্তন সদস্যরা মূল কমিটির একটি রূপরেখা দিলে তাতে সকলে একমত হন এবং চাষী সিরাজুল ইসলামসহ সেসময়ে কেন্দ্রীয় ও শাখা নেতৃবৃন্দ তা গঠনতন্ত্রের প্রাথমিক সংসোধনী হিসেবে অনুমোদন করেন।

চাষী সিরাজুল ইসলাম চিপাচস-এর গঠনতন্ত্র বর্তমান সময়োপযোগী করে সংসোধিত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। পাশাপাশি কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রস্তাবিত রূপরেখা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হওয়ায় তা গঠনতন্ত্রের সংসোধনী হিসেবে অনুমোদন দেন।এবং অনুমোদিত সংশোধনী অনুসারে ফকির মহিউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও আবুল কাশেম আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও গঠন করা হয়।

উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা হলেন- সৈয়দ এনায়েত হোসেন(সাবেক অলংকরণশিল্পী, চিত্রালী), চাষী সিরাজুল ইসলাম (সাবেক সভাপতি), ফজলুর রব স্বপন(সাবেক সভাপতি), ইসমত দেলোয়ার জগলু(সাবেক প্রচার সম্পাদক), বাহারউদ্দিন খেলন(সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক), সঈম আশরাফুল আলম লালন(সাবেক সহ-সভাপতি), মুজতবা সউদ(সাবেক কার্যনির্বাহী সম্পাদক), খোকন রানা(সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক), খায়রুল আনোয়ার মুকুল(সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য), নিজাম মল্লিক নিজু(সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ময়মনসিংহ শাখা) এবং তাসনিম হাসান হাই (প্রধান উপদেষ্টা প্রয়াত এ, টি, এম, হাই’র ছেলে)।

নবগঠিত কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি: সোলায়মান বাবু, সহ-সভাপতি: মাসুদ ফকরী খোকন, সহ-সাধারণ সম্পাদক: মিষ্টি চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক: শেফু জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক: মোঃ শফিউল আলম শফিক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক: মোঃ শাহ আলম শাবু, অর্থ সম্পাদক: আবদুল মান্নান ফিরোজ, দপ্তর সম্পাদক: হাছিবোর রহমানপ্র, চার ও প্রকাশনা সম্পাদক: সাইদুল আলম বকুল, চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: ফারুক আহম্মদ পিজু, কার্যনির্বাহী সদস্য: শিবেন চক্রবর্তী, আবদুল গফুর কাজী, কৃষ্ণ সিং, তুহীন আক্তার শিউলী, ড. জোবায়দা আক্তার হাসি, জাহানারা বেগম শবনম, ইয়ারুল হক কাজল, আফসার উদ্দিন, নাজমুল টিটো, হাবিবুর রহমান হাবিব, মোঃ আনোয়ার হোসেন, আজম শেখ, নাসিমা ইয়াছমিন, আসমা আহমেদ, এস এম দেলোয়ার হোসেন, আবুল কালাম আজাদ সজীব, কামাল হোসেন খান, সিদ্দিকুর রহমান রাজা, জাহাঙ্গীর আলম সাগর প্রমুখ।

/আরএ

Comments