খুলনা জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন

প্রকাশিত: ৭:১২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০১৯

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধিঃ চলমান খালকে অবৈধভাবে বদ্ধ জলাশয়ে রূপান্তর করে আমরাই আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করেছি। সুন্দরবনের মধ্যে প্রায় তিন হাজার খাল রয়েছে। বিষ দিয়ে মাছ আহরণের ফলে সব প্রজাতির মাছ ধ্বংস হচ্ছে। নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৫৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে সুন্দরবন এলাকার ৮৩টি খাল সংস্কার করা হচ্ছে।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ‘মৎস্য সেক্টরের সমৃদ্ধি, সুনীল অর্থনীতির অগ্রগতি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।

মেয়র বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির বিশেষ দিক চিংড়ি চাষ ও রপ্তানি। অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ করার পরিবর্তে পরিকল্পিত চাষ ও জলাশয়ের প্রকৃত মালিকদের মাধ্যমে মাছ চাষ নিশ্চিত করতে অতীতের মতো চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। মনে রাখতে হবে জমি যার ঘের তার।

তিনি বলেন, খুলনার ময়ূর নদীর সঙ্গে যুক্ত ২২টি খাল অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৎ, যোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সবাই দেশের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করলে দেশ আরো এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, মোট কৃষিজ উৎপাদনের ২৫ শতাংশ ও প্রাণিজ আমিষের ৬০ শতাংশ মৎস্যখাত যোগান দিচ্ছে। দেশের ১১ শতাংশ জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ খাতের সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদানে উদ্বৃত্ত। দেশে প্রতিদিন মাথাপিছু ৬০ গ্রাম মাছের চাহিদার বিপরীতে ৬২ দশমিক ৫০ গ্রাম সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে তৃতীয়, বদ্ধ পানিতে মাছ চাষে পঞ্চম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭৩ হাজার ১৭১ মেট্রিক টন মৎস্যজাত দ্রব্য রপ্তানি করে ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। ২০১৮ সালে খুলনা জেলায় মাছের উৎপাদন ছিল ৬২ হাজার ২২৯ মেট্রিক টন যা চাহিদার তুলনায় ৬ হাজার ৭৬৭ মেট্রিক টন বেশি।

খুলনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক রণজিৎ কুমার পাল, কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম ফজলুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিচুর রহমান ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পংকজ কান্তি মজুমদার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু ছাইদ। এতে মৎস্যচাষি সমিতি, মৎস্যজীবী সমিতি ও মৎস্য খাদ্য বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মেয়র নগরের শহিদ হাদিস পার্ক পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন এবং মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য র‌্যালিতে নেতৃত্বে দেন। র‌্যালিটি শহিদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। র‌্যালিতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন।

Comments