খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে বিদেশ নিতেই হবে : মেডিকেল বোর্ড

প্রকাশিত: ১:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২৩
  • অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেছেন, ‘এখন খালেদা জিয়ার যে অবস্থা, তাতে করে তাঁকে বাসায় নেওয়া যাবে না। এখানকার চিকিৎসকেরা তাঁদের সাধ্য অনুযায়ী যা করার করেছেন। এখন তাঁকে বিদেশে নিতেই হবে। এতে তাঁর জীবন রক্ষা হতে পারে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশের চিকিৎসা দিয়ে আর বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন তাঁর চিকিৎসায় সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ড। তাই চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাঁকে বিদেশের উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা। বোর্ড বলছে, তাদের হাতে আর কোনো অপশন নেই।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করে এমনটাই জানিয়েছে খালেদার চিকিৎসা পরিচালনাকারী মেডিকেল বোর্ড। এবারই প্রথম মেডিকেল বোর্ড প্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কথা বললো।

এর আগে বিভিন্ন সময় খালেদা জিয়ার পরিবার, ব্যক্তিগত চিকিৎসক বিএনপি নেতাদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা নাম প্রকাশ করে কোনো মন্তব্য করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকেরা বলছেন, কিছু ওষুধপত্র ও সীমিত পদ্ধতির ওপর ভর করে বর্তমানে কোনোমতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এটা সাময়িক। এখন অনেক উচ্চমানের অ্যান্টিবায়োটিকও কাজ করছে না। এ অবস্থায় মারাত্মক মৃত্যুঝঁকিতে আছেন তিনি।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত জটিল জানিয়ে মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘এখন তাঁর চিকিৎসায় আমরা যা করছি, এটা একটা সাময়িক এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। কিন্তু এই ব্যবস্থা শেষ হয়ে আসছে। আমাদের হাতে আর অপশনস নাই। যত দিন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা করানো না হবে, তত দিন পর্যন্ত ওনার অবস্থা অবনতির দিকে যাবে। সেটাই হচ্ছে এখন। ওনার বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে পেটে ও বুকে পানি চলে আসা এই জটিলতারই অংশ।’

এফ এম সিদ্দিকী বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ফুসফুসে একটা সংক্রমণ হয়েছে। এখন সেই সংক্রমণের চিকিৎসা চলছে। মাঝে মাঝে ওনার অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি ব্লিডিংও হয়েছে। ভর্তির পর থেকে এখন পর্যন্ত ওনাকে ৮ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার জন্য “টিপস” নামক একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। টিপস করা হলে পেটে, বুকে আর পানি আসবে না। কিন্তু বাংলাদেশে টিপস করানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন বাংলাদেশে হয় না।

তবে আশার কথা জানিয়ে এফ এম সিদ্দিকী আরো বলেন, ‘এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। আমি মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে সর্বসম্মতভাবে বিদেশে চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা মনে করি বিদেশের উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার মাধ্যমে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব।’

খালেদার বিদেশে চিকিৎসায় আইন মন্ত্রণালয়ের না, ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিএনপির

আইন সংশোধন করে হলেও খালেদাকে বিদেশ পাঠানোর দাবি আ’লীগ নেতার

বিদেশ যেতে হলে খালেদাকে আবার জেলে যেতে হবে : শেখ হাসিনা

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চেয়ে কাঁদলেন মির্জা ফখরুল

উল্লেখ্য,  দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন তিনি। দেশে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ওই দুই শর্তে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর দফায় দফায় সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত আরো ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

/এসএস/একুশনিউজ/

Comments