স্কুলের প্রবেশ মুখে মুরগীর দোকান, ছড়াচ্ছে বিকট দুর্গন্ধ

প্রকাশিত: ১:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০১৯

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি: বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হয় নাক চেপে, আবার বের হবার সময়ও একই অবস্থা। বাচ্চারা বিদ্যালয়ের মাঠে ঠিকমতো খেলাধুলা করতে পারে না, কারন বিকট গন্ধ।

শ্রেনি কক্ষেও প্রবেশ করে এই গন্ধ। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ঘেষে রয়েছে একটি মুরগী বিক্রির দোকান। বড় বড় খাঁচায় রাখা হয়েছে মুরগী।

এই অবস্থা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। কর্তৃপক্ষ বলছেন একাধিকবার বলেও তারা বিষয়টির কোনো সমাধান পাচ্ছেন না। উল্টো দোকান মালিক বলছেন এটা সরকারি জায়গা, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছু বলার নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের একটি বাজার চন্ডিপুর। এই বাজারের সঙ্গেই রয়েছে একটি প্রাথমিক ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঝিনাইদহ-কোটচাঁদপুর ভায়া তালসার সড়কের ধার ঘেষে। এই সড়কের পাশেই রয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রবেশ পথ। ৬২ শতক জমির উপর ১৯৩৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। এখানে শিক্ষক আছেন ৮ জন, আর কর্মচারি আছেন একজন।

বিদ্যালয়ে প্রবেশ করার সময় সকলের একটি গন্ধের মুখোমুখি হতে হয়, সেটা মুরগীর গন্ধ। গত মঙ্গলবার দুপুরে আমাদের প্রতিনিধি বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে তাকেও গন্ধের মোকাবেলা করতে হয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই সমস্যা তাদের দীর্ঘদিনের। কিন্তু স্থানীয় এক ব্যক্তি এই দোকানটি বসানোর কারনে তারা কিছুই বলতে পারেন না। তারপরও কয়েকদফা বিষয়টি অবহিত করেছেন, কিন্তু দোকান মালিক মুক্তার হোসেন কোনো সমাধান করেনি।

শিক্ষকরা জানান, ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের কোনো সীমানা প্রাচীর ছিলো না। তখন রাস্তার ধার দিয়ে দোকান বসানোর অজুহাতে বিদ্যালয়ের মধ্যে চলে আসতো। তখন অবশ্য এই মুরগীর দোকান ছিলো না। কিন্তু কয়েকমাস হলো সেখানে মুরগীর দোকান বসানো হয়েছে।

এখন বিদ্যালয়ের সীমানা প্রচীর হয়েছে। রাস্তার সঙ্গেই এই প্রাচীর। প্রাচীরের পাশে সামান্য যেটুকু জায়গা আছে সেখানে দোকান বসানো হয়েছে। বড় বড় খাঁচা তৈরী করে সেখানে মুরগী রাখা হয়েছে।

তবে দোকান আর বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (গেট) একই জায়গায় হয়ে গেছে। আর প্রাচীরের মধ্যেই রয়েছে শিক্ষকদের অফিসকক্ষ ও শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ। বাইরের এই গন্ধ দ্রুতই ভিতরে প্রবেশ করে।

বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খায়রুন্নাহার জানান, তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান থাকা অবস্থায় কয়েকদফা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এমনকি সাবেক জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম থাকা অবস্থায় একবার দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছিলো। কিন্তু আবারো বসানো হয়েছে।

বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে তাদের কিছু করার নেই। স্থানিয় লোকজন এখানে দোকান বসিয়েছেন। তাদের বাচ্চারা কষ্ট করছে, কিন্তু তাদের কোনো ভুমিকা নেই। তারা কথা বলতে গেলে উল্টো বলছে এটা বিদ্যালয়ের জায়গা
নয়।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য গেলে মুক্তার হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তবে দোকানে ব্যবসারত তার ছেলে লিখন হোসেন জানান, দোকানে সেভাবে গন্ধ হয় না। আর তাদের দোকান অনেক দিনের।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাক আহম্মদ জানান, তিনি বিষয়টি দেখবেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি বলেন, ইতিপূর্বে এটা ছিলো না, নতুন করে কেউ দোকান বসালে অবশ্যই সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

/এসএস

Comments