পলাশ রহমান সেলিব্রিটি হোন কিন্তু দাবার গুটি হবেন না নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, মে ৩০, ২০১৮ শ্রদ্ধেয় পলাশ ভাই, আমি খুলনা থেকে আপনার একজন ভালো পাঠক এইচ এম জুনাইদ মাহমুদ। মুফতি ফয়জুল করিম কে নিয়ে আপনার একটি চমৎকার লেখা পড়লাম। এর পূর্বেও আপনার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে লেখা পড়েছি। আপনি বেশ ভালো লেখেন বিধায় আমি আপনার একজন নিয়মিত পাঠক। চলমান সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমকে নিয়ে আপনার লেখার বিষয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাই। আশা করি মন্তব্যগুলো গুরুত্বের সাথে নিবেন। “সৈয়দ ফয়জুল করীম আপনাকে পাড়ি দিতে হবে অনকে পথ”শিরোনামে আপনি যে লেখাটি লিখেছেন তাতে আপনাকে ধন্যবাদ দেয়ার পূর্বেই কয়েকটি মন্তব্য করতে চাই। আমি আপনার বেশ কিছু লেখা পড়ে লক্ষ্য করেছি আপনি খুব সমালোচনা প্রিয় একজন লেখক। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বড় বড় বিষয়ে সমালোচনা মূলক লেখে লিখে নিজেকে সেলিব্রিটি করার চেষ্টাটা আপনার বেশ পুরোনো এবং ইতিমধ্যে বেশ জমিয়েছেনও। বেফাকের বিষয়টি নিয়ে মুফতি ফয়জুল করিমের একটি বক্তব্যের জের ধরে আপনি বলেছেন তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও যৌক্তিক আলোচনা উপস্থাপনার কারণে গুরুত্ব হারায়। বিষয়টি আপনার দৃষ্টিগোচর হওয়ায় বুঝলাম আপনি বেশ উপস্থাপনা সচেতন একজন ব্যাক্তি। ওনার বিভিন্ন প্রতিভা ও যোগ্যতার বরাত দিয়ে বুঝাতে চেয়েছেন আপনি ওনাকে খুব কাছ থেকে অথবা গভীর ভাবে চেনেন। ইসলাম ও জাতির বেশকিছু প্রয়োজনীয়তার কথা লিখে বুঝাতে চেয়েছেন আপনি ইসলাম ও জাতিকে নিয়ে খুব চিন্তিত এবং ইসলামের জন্য কিছু করতে চান। ভালো,বিষয়গুলো অত্যান্ত প্রজেটিভ দিক রাখে। কিন্তু এতসব প্রজেটিভ দিকের মাঝখানে কিছু নেগেটিভ দিক বেরিয়ে এসেছে যা আমি আপনাকে অবগত করতে চাই অথবা আপনার অবগতি পরবর্তী মন্তব্যের মাধ্যমে আপনার সকল পাঠকের সংশয় দূর করতে চাই। আশা করি আপনি এ বিষয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করবেন। পলাশ রহমান আপনার লেখার আপত্তি সমূহ। ১/ ফয়জুল করিম এর সমালোচনা করে আপনি বলেছেন বাচনভঙ্গি সংশোধন করুন কিন্তু প্রশ্ন হলো আমি আপনার লেখার ভঙ্গিতে বেশ ফুরফুরা ব্যাঙ্গ লক্ষ্য করলাম এবং অতি মাত্রায় সম্মানহানি লক্ষ্য করলাম। ২/ আপনি বলেছেন ফয়জুল করিমের বক্তব্যে আপনি চোখ মুখে অগ্নিঝরা ক্ষোভ দেখেন কিন্তু আমিও আপনার লেখায় বেশ প্রতিহিংসা ও মাত্রাতিরিক্ত সমালোচনা লক্ষ্য করলাম। ৩/ আপনি ফয়জুল করিমকে স্টেজের সামনে লক্ষ লোক দেখে উত্তেজিত হতে বারণ করেছেন কিন্তু আমি আপনার লেখায় বেশ অনধিকার চর্চা লক্ষ্য করলাম। ৪/ আপনি ফয়জুল করিমকে নিজস্ব বেডরুম ছাড়া অন্য কোনো জায়গাকে নিজস্ব ভাবতে না করেছেন কিন্তু আপনাকে কোটি কোটি মানুষের পদচারণার প্লাটফর্ম ফেসবুককে নিজের বেডরুমের মতোই আপন করতে দেখলাম। ৫/ আপনি ফয়জুল করিমকে সব বিষয়ে সবজাগায় আলোচনা করতে নিষেধ করলেন অথচ আমি আপনাকে ফয়জুল করিমের একজীবনের সব বিষয়ের সমালোচনা একজায়গাতেই একলেখাতেই করতে দেখলাম। ৬/ আপনি ফয়জুল করিমকে ধৈর্যশীল হওয়ার পরামর্শ দিলেন এবং সব সময় সব বিষয়ে আলোচনা না করার পরামর্শ দিলেন অথচ এক বেফাকের ইস্যু পেয়েই আমি আপনাকে হাজারো বিষয়ের সমালোচনা এক করতে দেখলাম যেন আপনি এমনি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। ৭/ আপনি ফয়জুল করিমকে বললেন তিনি মঞ্চ পেলেই ইতিহাসের পাঠ দেন এবং স্থান কাল পাত্র বিবেচনা না করেই কথা বলেন অথচ আমি আপনাকে স্থান কাল পাত্র বিবেচনা না করেই ফেসবুকের কোটি জনতার সামনে একজন অনুসরণীয় সম্মানিত ব্যাক্তির নিচু থেকে নিচু সমালোচনা করতে দেখলাম। পান খাওয়া থেকে নিয়ে শারীরিক রোগের কথাও গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দিলেন। ৮/ আপনি ফয়জুল করিমকে বললেন সমালোচনা বা প্রতিক্রিয়া প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিক সতর্ক হোন অথচ সমালোচনার ক্ষেত্রে আপনাকে আমি বিন্দুমাত্র সতর্কতা অবলম্বন করতে দেখিনি এমনকি সমালোচনায় সীমাবদ্ধতাও রাখতে দেখিনি। ৯/ আপনি ফয়জুল করিমকে পোশাক পরিচ্ছেদ সহ সকল বিষয়ে রুচিশীল হতে বললেন কিন্তু আপনি রুচিশীলতার কোনো সংজ্ঞা বর্ণনা করেননি। আপনার কাছে পোশাকের রুচিশীলতাটা মূলত কি টাইপের তা কিন্তু পরিষ্কার করেননি। ১০/ আপনি ফয়জুল করিমকে একজন ইসলামী স্কলার বলেছেন আবার আনদালিব পার্থ, গোলাম মওলা রনি, মাহি বি চৌধুরী, তারেক রহমান, ঢাকার প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকদের অনুসরণ করতে বললেন কিছুই বুঝলামনা। আপনি মূলত ফয়জুল করিমকে কিভাবে দেখতে চান খিচুড়ি নাকি হালুয়া বোঝাতে পারেননি কিন্তু। ১১/ আপনি ফয়জুল করিমের সকল কাছের লোকগুলোকে মোসাহেব এবং অশুদ্ধ মানুষ বললেন আবার শুদ্ধ মানুষের কাতারে দাঁড় করিয়ে নিজ দলেরই কিছু সম্ভাবনীয় মানুষের নাম গড় গড় করে বলে দিলেন কেন? কি উদ্দেশ্য ? এনাদের নাম লিখলেন কেন ? পরিষ্কার না ! ১২/ আমার জানামতে আপনাকে ফয়জুল করিম ভালো ভাবে চেনে এবং খুব স্নেহ করে আপনি চাইলে তার সাথে যে কোনো বিষয়ে সিডিউল নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেতেন তবুও বার বার ইসলামী আন্দোলন ও তার সহযোগী সংগঠনের এমনকি শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সমালোচনার জন্য আপনি বার বার “আওয়ার ইসলাম” কে বেছে নেন কেন ? পরিষ্কার না ! পলাশ ভাই আপনার মতো কিছু পয়েন্ট টেনে বসলাম তাইনা ? আসলে এগুলো শুধু আমি না সবাই বোঝে। লাইফে কেরিয়ার স্টাবলিষ্ট করতে হবে কিন্তু অবশ্যই তা হতে হবে সততার সাথে। সেলিব্রিটির জন্য এতটা সীমা অতিক্রম করাটা কি ঠিক? তাছাড়া কারো দোষ গুন্ বর্ণনার ক্ষেত্রেও তো ইসলামের সুনিদৃষ্ট নিয়ম আছে তাইনা ? তাছাড়া আপনার যদিও ধর্মীয় জ্ঞান স্বল্পতা আছে কিন্তু জেনারেল ভাবে আপনি তো বেশ শিক্ষিত বটে তাহলে এই বোকামি গুলো কেন করছেন? একটু ভেবে দেখবেন কি ? আমি কিন্তু আপনাকে খুব ভালো করে চিনি তাই আর ১০ জনের মতো মন্তব্য করলামনা। অবশ্য আমার মনেও কিছু প্রশ্ন জেগেছে যেমন, আপনি এতো গভীর তথ্য পান কোথায় ? ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে কেন এতো মাথা ব্যথা আপনার ? ইতালিতে থাকেন সেখানে মূলত কাদের সাথে যোগযোগ/লেনদেন আপনার ? ইসলামী সংগঠনের ওপেন সমালোচনা কার ইশারায় বা কাদের মদদে করেন ? এতো সময় করে দেয় কে আপনাকে ? সাপোর্ট দেয় করা আপনাকে ? এমন আরো হাজারো প্রশ্ন করা যায় আপনাকে কিন্তু করব না কারণ আমি জানি আপনি এসবের উত্তর দেবেন না। শুধু এতটুকুই বলব নিজের অজান্তে আবেগবশতঃ এমন কিছু করবেন না যা ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের জন্য ক্ষতিকর। সেলিব্রিটি হোন তাতে কোনো দোষ নেই কিন্তু নিজ প্রতিভা ব্যায় করে কারো দাবার গুটি হবেন না প্লিজ। খুলনা থেকে ছোটভাই , এইচ এম জুনাইদ মাহমুদ Comments SHARES পাঠক প্রতিক্রিয়া বিষয়: