ঝিনাইদহে শালিক, চড়ুই কাঠঠোকরা সহ ৪৬ প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে!

প্রকাশিত: ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: অভয়াশ্রমের অভাব, ফসলে অতিরিক্ত বিষ প্রয়োগ, আইনের যথাযথ প্রয়োগ নাহওয়া এবং সৌখিন ও পেশাদার পাখিশিকারিসহ নানা কারণে ঝিনাইদহথেকে প্রায় ৪৬ প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হতে চলেছে। যে কারণে পরিবেশের উপরভয়াবহ প্রভাব এবং ঝিনাইদহ হারাতে বসেছে চিরচেনা পরিচিত পাখিরঐতিহ্য।

জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলাসহ খুলনা বিভাগে ৬২৪ প্রজাতির দেশীয়পাখির বসবাস রয়েছে। এরমধ্যে ঝিনাইদহ থেকে ৪৬ প্রজাতির পাখি আজবিলুপ্তির পথে। যার মধ্যে রয়েছে মহাবিপন্ন ১৫ টি প্রজাতি, বিপন্ন ১৭টি প্রজাতি, আর প্রজাতি সঙ্কটাপন্ন ৮টি, কম সঙ্কটাপন্ন ৬ টিপ্রজাতি।

সংরক্ষনের উদ্যোগ ও আইনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা, সচেতনতারঅভাব, পাখি শিকারিদের অমানবিকতা, পাখি ব্যবসায়িদের হীন মানসিকতারকারণে এ সকল পাখি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ফলে পরিবেশের ভারসম্যেরপাশপাশি ঝিনাইদহ হারাতে চলেছে দেশিয় পাখির বৈচিত্র।

এরই মধ্যেমহাসংকটাপন্ন পরিচিত কয়েক প্রজাতি পাখি ক্যালেন্ডার বাচিড়িয়াখানায় স্থান করে নিয়েছে। মহাবিপন্ন ১৫ টি প্রজাতি পাখিরমধ্যে রয়েছে হরিয়াল, কুড়া, রাজ শকুন, বাঘা বক, কালো তিমির, জলা তিমির,কাঠ ময়ূর, বাদী হাস, বুচা হাস, রাজ ধনেশ, রঙিলা বক, পদ্ম, সাত, ভয়াল,চন্দনা ও কোদালি বক।

এ সকল পাখি এক সময় নদী-নালা, খাল-বিলসহ ক্ষেতেখামারে বাড়ির আনাচে-কানাচে দেখা যেত। বিপন্ন ১৭ টি প্রজাতি মধ্যেরয়েছে কালো ঘুন্ড্রি, কাউ ধনেশ, কুঠিয়াল ধনেশ, রাত চড়া, গৈল হাস,হটটিটি, পানি কাটা, গাংচিল, সাদা ঈগল, রাজ গিলা, মদন টাক,কাকাতোয়া, হুতুম পেঁচা, কোকিল।

এ পাখির অধিকাংশই গ্রামেরবাঁশবাগান ও বন-জঙ্গলে রাতে ডাকাডাকির শব্দ শোনা গেলেও এখন আর তেমনশোনা যায় না। কোকিলের ডাক এখন যেন কবিতা আর গানের ছন্দে স্থান করেনিয়েছে। আর সংকটাপন্ন ৮টি প্রজাতির মধ্যে রয়েছে কাঠঠোকরা, লালামাছরাঙ্গা, সাপপাখি, ফিঙে, শালিক, চড়ুই, শ্যামা ও বাদুর। এ সকল পাখিরআবাসস্থল কমে যাওয়ায় বিলুপ্ত হচ্ছে। তবে ১৯৮১ সালের আইনের ব্যাখ্যা করলেসমগ্র বাংলাদেশকেই পাখির অভয়রন্য বলা যাই।

এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলারকৃষি কর্মকর্তা ড. খান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, পাখিপ্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যা জীবচক্রকেসঠিকভাবে পরিচালিত করে থাকে। যেমন, পাখি যে পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে, পাখির সংখ্যা যদি কমে যায় তাহলে পোকা-মাকড়ের সংখ্যা বেড়েযাবে। আর পোকা-মাকড়ের সংখ্যা বেড়ে গেলে, ফসলসহ সবুজ গাছ-গাছালির উপর তাদের তাদের মাত্রা বেড়ে যাবে। আর সবুজ গাছ-গাছালি উপরপ্রভাব পড়লে আমাদের উপরও প্রভাব পড়বে। তাই পাখি যেন ক্ষতি না হয়, সেদিকে আমাদের সকলেই খেয়াল রাখতে হবে। আর আমাদের কৃষি বিভাগ কৃষকদেরসচেতন করার জন্য কাজ করছে।

এবিষয়ে ঝিনাইদহ কৃষি সমপ্রসারণঅধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আকরামূল হক জানান, দেশিয় পাখিমুলত কৃষকের বন্ধু।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকতা ডা. কানাই লালস্বর্ণকার জানান, এ সকল পাখি আমাদের উপকার ছাড়া কোন ক্ষতি করেনা।পাখি আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। পাখির সংখ্যা যেন কমে নাযাই সেদিকে সবাই নজর দিতে হবে। আর পাখি যেন বিলুপ্ত না হয়, সে জন্য ঝিনাইদহ প্রাণি সম্পদ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

/আরএ

Comments