১ যুগ পরেও নির্মাণ হয়নি প্রস্তাবিত সড়ক, অকেজো ব্রীজগুলো

প্রকাশিত: ৯:১৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০১৯
সংযোগ সড়ক না হওয়ায় চলাচলের অনুপোযোগী ব্রীজ। ছবি: একুশ নিউজ

বাদশা আলম, বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনট উপজেলার জেট আর জিসি বাগবাটি রোডের খাটিয়ামারি বাজার থেকে ব্রহ্মগাছা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কের ৫টি খালের উপর সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ টি গাডার ব্রীজ নির্মিত হয় প্রায় এক যুগ আগে।

ব্রীজ নির্মানের এক যুগ পার হলেও প্রস্তাবিত সড়ক নির্মান হয়নি এখনো। ফলে কোটি কোটি টাকার ওই ব্রীজ গুলো জনগনের চলাচলে কোন কাজেই আসছে না।

এলজিইডির ধুনট উপজেলার প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ধুনট জেট আর জিসি বাগবাটি রোডের খাটিয়ামারি বাজার থেকে ব্রহ্মগাছা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গেজেটভুক্ত ছিল। গত একযুগ আগে প্রস্তাবিত ওই সড়কটি নির্মানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

প্রথম পর্যায়ে একই সড়কের খাটিয়ামারি বাজার থেকে সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মগাছা বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৫টি খালের উপর আর সিসি গাডার ব্রীজ নির্মান জরুরী হওয়ায় ২০০৭ সালে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে খাটিয়ামারী খালের উপর ৭২ মিটার এবং ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকায় নলগাড়া খালের উপর ১০০ মিটার গাডার নির্মাণ করা হয়।

এরপর ২০০৯ সালে কোনাগাতি খালের উপর ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকায় ৭২ মিটার, একই বছর প্রতিটি ৭২ মিটার করে রাজারামপুর খালের উপর ১ কোটি ৮৭ লাখ, আড়িয়া মোহন খালের উপর ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা সহ প্রায়সাড়ে ৮ কোটি টাকার ৫ টি আরসিসি গাডার ব্রীজ নির্মাণ করা হয়।

এ ব্যাপারে অবসর প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, ২০০৯ সালে প্রস্তাবিত সড়কটি পাকা করন সহ নওদা ব্রহ্মগাছা খালের উপর ব্রীজ নির্মানের চাহিদা পত্র এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু ২০১০ সালে সড়ক ও জনপথ (সওজ) সিরাজগঞ্জ জোনের কর্মকর্তারা প্রস্তাবিত ওই সড়কটি পাকা করনে জন্য তাদের বিভাগের আওতায় নেন।

কিন্তু গত ১ যুগেও প্রস্তাবিত সড়কটি পাকাকরন করা তো দুরের কথা নওদা ব্রহ্মগাছা খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ করতে না পারায় এলজিইডির অবসর প্রাপ্ত ওই কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করেন।

সড়ক নির্মান না হওয়ায় এক যুগ আগে নির্মাণ করা এলজিইডির সাড়ে ৮ কোটি টাকা ৫টি ব্রিজ জনগনের চলাচলে কোনো কাজে আসছে না। রান্ডিলা গ্রামের জুয়েল আহম্মেদ জানান, দির্ঘদিনে রাস্তাটি নির্মাণ না হওয়ায় কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ব্রিজ গুলো এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘর গৃহস্থের কাজে ব্যবহার হচ্ছে।

ফলে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের ৮টি গ্রামের মানুষের চালাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তা না থাকায় বিশেষ করে মুমুর্ষকোন রোগীকে চিকিৎসার জন্য সহজে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়াতে নেওয়া যায় না।

গোপাল নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার জানান, বগুড়ার সাথে সিরাজগঞ্জ জেলার যোগাযোগের প্রধান এ সড়কটিতে কোটি কোটি টাকার ব্রীজ নির্মাণ করা হলেও সড়ক নির্মাণ না করায় চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিদিন দুই জেলার লাখ লাখ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ ব্যপারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) সিরাজগঞ্জ জোনের উপবিভাগীয় প্রকৗশলী আনোয়ার পারভেজ বলেন, সড়কটি পাকা করনের জন্য প্রকল্প তৈরী করে আমরা অনেক আগেই মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছি অর্থ বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে। আদৌ খাটিয়ামারী থেকে ব্রহ্মগাছা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে কি-না তা নিয়ে এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা অবিলম্বে সড়কটি পাকা করনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কমনা করছেন।

/সিএইচ

Comments