দলিত সম্প্রদায়ের ডাকা বিক্ষোভে নিহত ৯ আহত দুই শতাধিক নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০১৮ স্টাফ রিপোর্টার : পুরো ভারতজুড়ে দলিত সম্প্রদায়ের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশটি। সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের প্রতিবাদে সোমবার দেশটির অন্তত ১০টি রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯জনে। এছাড়াও আহত হয়েছে দুই শতাধিক। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের এক রায় নিয়ে দলিত সম্প্রদায়ের ধর্মঘটে ভারতের কয়েকটি রাজ্যে হাজার হাজার নিম্নবর্ণের মানুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা ভারত। দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনের কারণে ভারতের রেল যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে, বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু সড়ক। চলমান আন্দোলন-সহিংসতার কারণে সুপ্রিম কোর্টকে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতেও অনুরোধ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এক রুলে আদালত বলেন, শিডিউলড কাস্ট অ্যান্ড শিডিউলড ট্রাই (প্রিভেনশন অ্যান্ড অ্যাটরোসিটিস) অ্যাক্ট যা এসসি/এসটি অ্যাক্ট নামে পরিচিত, অতীতে এই আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। রায়ে আদালত এই আইনের আওতায় অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার না করা এবং জামিনের বিধান সংযোজন করেন। আর আদালতের এ বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের অরক্ষিত মনে করছেন বলে অভিযোগ করছেন দলিতরা। এই অসন্তোষ থেকেই চলমান আন্দোলনের শুরু। কারণ ভারতজুড়ে নিম্নবর্ণের মানুষের ওপর বহু সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সরকারি পরিসংখ্যানে জানা যায়, শুধু ২০১৬ সালেই বর্ণবিদ্বেষের কারণে নিম্নবর্ণের মানুষের ওপর ৪০ হাজারের বেশি অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কথা জানা যায়। সর্বভারতীয় নিম্নবর্ণ জাতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক কে পি চৌধুরী বলেন, ‘এসসি/এসটি আইনটি ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের মানুষদের যেকোনো অন্যায় ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়ের ফলে এই আইনি বাধ্যবাধকতা শেষ হয়েছে। আমরা সবাই খুব হতাশ এবং দুঃখ পেয়েছি।’ মধ্যপ্রদেশ পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। রাজ্যটির বেশ কিছু অংশে কারফিউও জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের রাজ্য রাজস্থানেও এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আন্দোলনের কারণে পাঞ্জাবে সব ধরনের পরীক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও। এ ছাড়া রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়। উত্তর প্রদেশের উত্তর অংশ এবং বিহারেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। ভারতের রাজধানী দিল্লিতেও বিক্ষোভ করেছেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে সেখানে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে শহরের কেন্দ্রে সড়ক বন্ধ থাকায় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। রাজ্যের গোয়ালিয়রে বিক্ষোভকারীরা রেইললাইন অবরোধ করে এবং বেশ কিছু গাড়িতে অগ্নি-সংযোগ করে। রাজস্থানের আলওয়ারে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহতের খবর পাওয়া যায়। উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগরে একজন ও মিরুতে একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাজ্যজুড়ে ৪০ পুলিশ সদস্যসহ ৭৫ জন আহত হয়েছেন। পাঞ্জাব এবং ঝাড়খন্ডেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঞ্জাবে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সড়কের যান চলাচল বন্ধ আছে। ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাচিতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করেছে। নিম্নবর্ণের মানুষদের সুরক্ষায় ১৯৮৯ সালে ভারতের পার্লামেন্টে এসসি/এসটি অ্যাক্ট পাস হয়। সম্প্রতি দলিত এবং উপজাতিদের সুরক্ষা আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট এক আদেশে বলা হয়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করা যাবে না। এদিকে, সংঘর্ষের নিন্দা জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীসহ বিভিন্ন রাজ্যের নেতারা। তারা আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আহ্বানও জানান। /এসআর Comments SHARES আইন-পরামর্শ বিষয়: ১০টি রাজ্যেউত্তর প্রদেশের উত্তর অংশ এবং বিহারউত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীঝাড়খন্ডের রাজধানী রাচিদলিত সম্প্রদায়ের ডাকা বিক্ষোভে নিহত ৯ আহত দুই শতাধিকধর্মঘটেপাঞ্জাব এবং ঝাড়খন্ডভারতজুড়ে দলিত সম্প্রদায়ের ডাকা বিক্ষোভমিরুমুজাফ্ফরনগরশিডিউলড কাস্ট অ্যান্ড শিডিউলড ট্রাই (প্রিভেনশন অ্যান্ড অ্যাটরোসিটিস) অ্যাক্ট যা এসসি/এসটি অ্যাক্ট নামে পরিচিতসর্বভারতীয় নিম্নবর্ণ জাতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক কে পি চৌধুরীসুপ্রিম কোর্টের