ঠাকুরগাঁওয়ে বর্জ্য ও পঁচা পানির গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

প্রকাশিত: ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০১৯

ইলিয়াস আলী: ঠাকুরগাঁও শহরের নিশ্চিন্তপুর হ্যাডস পাড়ায় ‘চিজ’ কারখানার বর্জ্য ও দূষিত পানির গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। অতিষ্ঠ হয়ে ইতোমধ্যে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা।

জানা গেছে, নিশ্চিন্তপুরে মিঠু নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে একটি চিজ কারখানা চালান। কিন্তু বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা না থাকায় কারখানার বর্জ্য ও ময়লা পানি পাশের একটি পুকুরে ফেলা হয়। ওই পুকুরের পঁচা পানির প্রচণ্ড দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

এ দিকে, কারখানার মালিককে বিষয়টি বারবার জানানো হলে তিনি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত রবিবার( ৩ মার্চ) ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক ও পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করে এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানার পাশের পুকুরে বর্জ্য ও ময়লা পানি ফেলা হচ্ছে। দুপুর ১টার দিকে কারখানায় উপস্থিত হন নয়ন নামের এক ব্যক্তি। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি মুঠোফোনে মিঠু নামে আরেক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। যদিও মিঠু নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা বলে দাবি করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সালেহা বেগম বলেন, ‘কারখানার বর্জ্যের দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা বেশ মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারখানার মালিককে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।’

মাসুদ নামে এক বাসিন্দা অভিযোগ করে জানান, অনেকদিন ধরে কারখানার মালিককে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো সমাধান মেলেনি। বরং উল্টো সে আমাদের হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘তোরা আমার কিছু করতে পারবি না, কী করবি কর?’

অন্য এক ব্যক্তি জানান, বর্জ্য ও দূষিত পানির গন্ধে এলাকার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গন্ধের তীব্রতার কারণে কেউ কিছু খেতে পারে না। এখন বাধ্য হয়ে প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেছি। যদি প্রশাসন পুকুরে দূষিত পানি ফেলা বন্ধ করতে পারে তাহলে এলাকাবাসী শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

এ বিষয়ে কারখানার মালিক মিঠু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই কারখানা চালাচ্ছি। দুর্গন্ধ দূর করতে আমরা পুকুরের নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ও চুন ছিটায়। এছাড়াও সমস্যার সমাধান করতে আমরা পৌরসভায় জানিয়েছি।’

এলাকার মানুষকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো এলাকাবাসীকে হুমকি দেইনি। এটা মিথ্যা অভিযোগ।’

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল হুদা অ্যাপোলো বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের কোনো কর্মী যদি এলাকাবাসীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকে তাহলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জেন ডা. আবু মো. খাইরুল কবির বলেন, ‘কারখানার বর্জ্য ও ময়লা পানি পুকুরে ফেলা ঠিক না। কারণ এই পানির স্পর্শে আসলে শরীরে ইনফেকশন হতে পারে।’

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আমার কাছে এখনো এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

এফএফ

Comments