সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচনে মারপিটের ঘটনায় ব্যারিস্টার কাজল গ্রেফতার নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ৯:২২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২৪ দ্বিতীয় দফায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের দুদিনব্যাপী নির্বাচনেও হট্টগোল ও মারামারি ঘটনা ঘটেছে। ভোট গণনাকে ঘিরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় বিএনপিপন্থী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে নিজ চেম্বার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সিআইডি সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কোর্ট চত্ত্বরে ঘটা অপ্রীতিকর ঘটনার মামলায় বিএনপি-জামায়াতপন্থি নীল প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। আজাদ রহমান বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে রাজধানীর তোপখানা রোড এলাকা থেকে গ্রেফতা করা হয়েছে। আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি সন্ধ্যায় তোপখানা রোডের চেম্বার থেকে বের হওয়ার পর পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য কায়সার কামাল। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দুই দিনের ভোট গ্রহণ বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ভোট গণনা নিয়ে শুক্রবার (৮ মার্চ) ভোরের দিকে দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই দিন ভোট গণনা বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার (৯ মার্চ) বিকেলে পুনরায় ভোটগ্রহণ হয়। হট্টগোল ও মারধরের ঘটনায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ (এস আর সিদ্দিকী সাইফ)। হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন সাইফুর রহমান। মামলায় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী আইনজীবী নাহিদ সুলতানাকে (যুথী) প্রধান এবং রুহুল কুদ্দুসকে দ্বিতীয় আসামী করা হয়। মামলা হওয়ার পর নাহিদ সুলতানাকে গ্রেপ্তারে কয়েক দফায় তার ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালালেও তাকে পাওয়া যায়নি বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় এর আগে সুপ্রিমকোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী বশির আহমেদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গ্রেপ্তার অন্য চারজন হলেন আইনজীবী ওসমান চৌধুরী, হাসানুজ্জামান, তরিকুল ইসলাম ও এনামুল হক। এদিকে গ্রেফতারের আগে বিকেলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস গ্রেপ্তার গণমাধ্যমে একটি লিখিত বিবৃতি পাঠান। তাতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৮ মার্চ (শুক্রবার) ভোরে সমিতির মিলনায়তনের ভেতরে নৈরাজ্যকর ঘটনা আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক ও নাহিদ সুলতানার সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও ওই ঘটনায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী তিনি ও আরো তিনজন আইনজীবী নেতাকে আসামী করে শাহবাগ থানায় একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা ওসমান চৌধুরীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যদের বাড়িতে বা চেম্বারে হানা দেওয়া হচ্ছে। এমন আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে যে, কোনো আইনজীবী সুপ্রিমকোর্টে যেতে পারছেন না। এমন একটা ভয়াবহ পরিস্থিতে ২০২২ ও ২০২৩ সালের সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ও সদ্য সমাপ্ত ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ন্যায় নিজেদের পছন্দমতো ব্যক্তিদের নাম বিজয়ী ঘোষণা করা হতে পারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতেই ভোট গণনা করা হবে কি না, তা নিয়ে শুক্রবার ভোরে আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে কয়েকজন প্রার্থীর মধ্যে বাদানুবাদ, হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী সাইফসহ কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। এর আগে গত সপ্তাহে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনেও মারামারির ঘটনা ঘটে। সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় ২০ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার (৮ মার্চ) শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। মামলায় ১ নম্বর আসামী করা হয় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথীকে। আর ২ নম্বর আসামি ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। Comments SHARES আইন-পরামর্শ বিষয়: নাহিদ সুলতানা যুথীরুহুল কুদ্দুস কাজলসুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিসুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন