কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় : বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ৩:৪২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০১৯

নিউজ ডেস্ক

জম্মু কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা ও বিশেষ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের বিষয়টিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ।

বুধবার (২১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার বিভাগের সহকারী সচিব মো. মাসুদ পারভেজ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ মনে করে, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সবসময়ই আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাসী। একইসঙ্গে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা এই অঞ্চলের সব দেশের জন্য অগ্রাধিকার।’

এর আগে গত ৯ আগস্ট র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এ নিয়ে বাংলাদেশে কেউ জলঘোলা করার চেষ্টা করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গত ৭ আগস্ট কাশ্মীর ইস্যুকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে বিবৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মরগান ওরতেগাস এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন বলে ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়। এছাড়া কাশ্মীর ইস্যু ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলে বিবৃতি দিয়েছে রাশিয়া।

এর আগে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে জানিয়ে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে পাকিস্তানকে নাক না গলানোর হুঁশিয়ারি দেয় ভারত। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্ৰত্যাহার এবং রাজ্যকে দ্বিখণ্ডিত করে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ দুটো কেন্দ্ৰশাসিত অঞ্চল ঘোষণার পর থেকেই পাকিস্তান ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে শুরু করেছে বলে দাবি জানায় ভারত। অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা না চালিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি মেনে ইসলামাবাদের এ বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দেয় ভারত।

সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের জন্যই ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হয়েছে।

৩৭০ ধারা হলো ভারতীয় সংবিধানের একটি অস্থায়ী বিধান (‘টেম্পোরারি প্রভিশন’)। এই ধারার আওতায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা ও বিশেষ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছিল। ৩৭০ ধারা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ১৭ অক্টোবর।

এই ধারার আওতায় জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতীয় সংবিধানের আওতামুক্ত রাখা হয় (অনুচ্ছেদ ১ ব্যতিরেকে) এবং ওই রাজ্যকে নিজস্ব সংবিধানের খসড়া তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়।

৩৭০ ধারা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ এবং যোগাযোগ ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জম্মু কাশ্মীরে হস্তক্ষেপের অধিকার ছিল না কেন্দ্রীয় সরকারের। এমনকি কোনো আইন প্রণয়নের অধিকার ছিল না কেন্দ্র বা সংসদেরও। আইন প্রণয়ন করতে হলে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের সম্মতি নিতে হতো। গত ৫ আগস্ট সেই ৩৭০ নম্বর ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

উল্লেখ্য, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ঢাকা সফরের পরপরই এই বিবৃতি প্রকাশ করলো বাংলাদেশ।

গতকাল মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতের আসাম রাজ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে যা হচ্ছে সেটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও বিবৃতি দেন এস জয়শঙ্কর।

Comments