‘বিরোধীদলীয় নেতাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশ’ নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১০:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২৩ কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি প্রদান প্রসঙ্গে আলোচনা চলছিলো। আইমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সূত্র ধরে সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করলে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলেই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। কিন্তু রোববার (১ অক্টোবর) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুমতি দেওয়ার আইনত সুযোগ নেই। এর জন্য তিনি সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, বিদেশে যেতে হলে বর্তমানে নিবার্হী আদেশে থাকা শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির আদেশ বাতিল করে আদালতে যেতে হবে। সম্প্রতি চলা কয়েকদিনের এই ঘটনা প্রবাহ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে তুরস্কের সরকারী সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি। সোমবার (২ অক্টোবর) ‘বিরোধীদলীয় নেতাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে আনাদুলু এজেন্সি। আনাদোলু’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। বিরোধীদলীয় নেত্রী ও দুইবারের প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বাধা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। খালেদা জিয়ার পরিবারের করা একটি আবেদন নাকচ করার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী মন্ত্রণালয় বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দিতে পারে না। আইনমন্ত্রী বলেন, “সরকারের আইনগত অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। সব কাজ আইনি কাঠামো অনুযায়ী করতে হবে। আইনকে বাইপাস করা, যে কোনো ক্ষেত্রেই একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি করবে”। আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চাইলে তাকে আবার কারাগারে যেতে হবে এবং তারপর আদালতে আবেদন করতে হবে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শনিবার প্রচারিত ভয়েস আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চাইলে তাকে অবশ্যই কারাগারে যেতে হবে এবং তারপর আদালতে আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং উন্নত লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তিনি ২০০৮ সালে দুর্নীতির জন্য ১৭ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন এবং গৃহবন্দি অবস্থায় মুক্তি পাওয়ার আগে দুই বছরের জন্য জেলে ছিলেন। জিয়ার দল (বিএনপি) অবশ্য তার বিরুদ্ধে দেয়া আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করেছে এবং খালেদা জিয়াকে তার অবস্থা গুরুতর উল্লেখ্য করে অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা ও অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড লিভার ট্রান্সপ্লান্টের সুপারিশ করেছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে বিদেশে একটি উন্নত মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো দরকার। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। কোভিড মহামারী চলাকালীন ২৫ মার্চ, ২০২০- এ সরকার তাকে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। এই শর্তে তার সাজা স্থগিত করে যে, তিনি তার বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না। Comments SHARES জাতীয় বিষয়: Anadolu Agencyআনাদোলু এজেন্সি