তাবলিগের দুই পক্ষই অনড় অবস্থানে

প্রকাশিত: ৪:০২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০১৮

একুশ নিউজ: সংঘর্ষ ও প্রাণহানির পরও তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড়। সংগঠনটির আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধীরা সাদপন্থীদের শরিয়তবিরোধী বলেই দেখছেন।

অন্যদিকে সাদপন্থীরা সমস্যা নিরসনে পৃথকভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার কথা বলছেন। পৃথকভাবে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপও চেয়েছেন।

  • সমস্যা নিরসনে ৭ দফা দিয়েছেন সাদপন্থীরা।
  •  আলেম ওলামাদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে ৬দফা দাবি।

টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত শনিবার দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিন শতাধিক মুসল্লি আহত হন। নিহত হন একজন।

রোববার সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার জন্য সাদপন্থীদের দায়ী করেন সাদবিরোধীরা। গতকাল সোমবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে সাদবিরোধীদের দায়ী করেন সাদপন্থীরা।

তাঁরা দাবি করেন, সংঘর্ষের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তাঁদের অনুসারীদের মসজিদ-মাদ্রাসায় আটকে মারধর করা হচ্ছে।

ইজতেমা মাঠে হামলাকারীদের বিচার চেয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসনের মাধ্যমে এই স্মারকলিপিটি দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।

সরকার যদি এদের বিচারের আওতায় না আনে তাহলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি দেবেন ওলামায়ে কেরাম।

পড়ুন…. টঙ্গীতে ইজতেমায় হামলার প্রতিবাদে আলেমদের সংবাদ সম্মেলন; ৬দফা দাবি

সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন সাদবিরোধী মাওলানা আবদুল ওহাব। মামলায় ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে দেড় শতাধিক মুসল্লিকে।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সাদবিরোধীরা।

এতে হামলার নির্দেশদাতাসহ জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, হতাহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ এবং পূর্বঘোষিত তারিখে ইজতেমা অনুষ্ঠানের কার্যকর ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়েছে।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সাদপন্থী মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত ছিল নির্বাচনের আগে দুই পক্ষের কেউই জমায়েত করতে পারবে না। তা সত্ত্বেও ইজতেমা ময়দানে একটি পক্ষ (সাদবিরোধী) জড়ো হয়।

প্রশাসন তখন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ শনিবারের সংঘর্ষের পর মাঠ খালি করা হয়। এ পদক্ষেপ আগে নিলে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটত না। তাঁর মতে, সরকার মনোযোগ না দেওয়াই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে সাতটি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা ময়দানসহ দেশের সব জেলা ও উপজেলা মারকাজে সপ্তাহের ভিন্ন ভিন্ন দিনে তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনা, এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত বা মৌখিক অপপ্রচার না চালানো, দুই পক্ষের বিরোধে কোনোভাবেই মাদ্রাসাছাত্রদের ব্যবহার না করা এবং কোনো বিরোধ দেখা দিলে স্থানীয় প্রশাসন উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

মামলার বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন বলেন, মামলায় বলা হয়েছে, হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করা মুসল্লিদের ওপর হামলা করা হয়েছে। পুলিশ মামলার অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।

/সিএইচ

Comments