ইভিএম ব্যবহার করলে মামলা করবে ঐক্যফ্রন্ট! নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৯:০৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০১৮ একুশ ডেস্ক: ইলেক্ট্রিনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম এর ব্যবহার বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থী উল্লেখ করে তা ব্যবহার করলে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করার করার কথা বলছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত ‘ইভিএমকে না বলুন, আপনার ভোটকে সুরক্ষিত করুন’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেছেন জেএসডির সভাপতি আা স ম আব্দুর রব। আ স ম রব বলেন, ইভিএম ব্যবহার করা হলে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সংবিধান লংঘনের দায়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ এর ২ উপধারা উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংসদ গঠিত হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে। ইভিএম মেশিনে প্রত্যক্ষ ভোট হবে না। তাই সংবিধান সংশোধন করা ছাড়া ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ ভোটের শর্ত হলো ভোট গণনা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ থাকবে। বাংলাদেশে এই ইভিএম ব্যবহার করা গণতন্ত্র বিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী। সেনাবাহিনীকে দিয়ে এই সংবিধান বিরোধী কাজ করিয়ে তাদেরকে বিতর্কিত করবেন না। ইভিএম কারা তৈরি করেছে, এই মেশিন কোথা থেকে অপারেট করা হবে জনগণ জানে না। এটা ব্যবহার করা যাবে না। করলে সংবিধান লংঘনের দায়ে মামলা করা হবে। ঐক্যফ্রন্ট বলছে, এই নির্বাচনে আমরা যাব। আর সেই নির্বাচনে ভোট বিপ্লব হবে। কোনো কিছুতেই আটকানো যাবে না। জনগণ ইভিএম প্রতিরোধ করবে। সেমিনারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশন নিজ থেকে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বসে আছে। এ কারণে জনগণের কথা তাদের কানে যাচ্ছে না। এজন্য ধিকৃত সরকার, রাজনৈতিক দেউলিয়া হয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ আবারও জোর করে ক্ষমতায় আসার জন্য অপকৌশল করছে। জনগণের উপর আস্থা না থাকলে এরকম করে। জনগণ ভোট কারচুপি প্রতিহত করবে। কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা ইভিএম চাই না। কারণ ইভিএম যারা এনেছেন তারাও ব্যবহার করতে জানেন না। আর যারা ভোট দেবেন তারা এখনো তা দেখেননি। একজন নাগরিকের ইচ্ছেমতো ভোট দেয়ার অধিকার আছে। যারা ইভিএম দেখেননি, তারা ভোট দিলে তাদের ভোট যে প্রয়োগ হবে তার নিশ্চয়তা নেই। জনগণ এই ইভিএম প্রতিরোধ করবে। নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা প্রধানত নির্বাচনে যেতে চাই৷ এটিকে আমরা লড়াই হিসেবে নিচ্ছি। আর ইভিএমের বিরোধীতা করছি একারণে যে, তারা (সরকার) ভোট চোর। এই সুযোগ তারা নেবে। কারণ আগে তাদের ভোট চুরির উদাহরণ আছে। ইভিএম হলো একটি ফালতু জিনিস। আমরা একটি বস্তুনিষ্ঠ নির্বাচন চাই। তার জন্য আমরা ইভিএম চাই না। সরকার নির্বাচন কারচুপি করার চেষ্টা করলে জনগণের অভ্যুত্থান হবে বলেও হুমকি দেন মান্না। ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনকে তো এখনো খোদাভক্ত মনে হচ্ছে। আশা করি তাদের বিবেক জাগ্রত হবে৷ ইসিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বেশি চালাকি করবেন না। উল্টাপাল্টা কিছু করলে পরে বাড়িতে নিজের মুখটি লুকিয়ে রাখতে হবে। সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. আব্দুল মঈন খান, গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরীসহ ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে ইভিএম প্রকৌশলীরা ইভিএম দিয়ে কিভাবে ভোট কারচুপি করা যায় তা চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের দাবি, যেকোনো ডিভাইসের মাধ্যমে দূর থেকে ভোট কারচুপি করার সুযোগ আছে ইভিএম মেশিনে। এই মেশিনের মাধ্যমে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে। এই পদ্ধতিতে প্রিসাইডিং অফিসার নিজেই কারো সহযোগিতা ছাড়া প্রতি ঘণ্টায় ১শ ভোট দিতে পারবেন বলে জানান সেমিনারে উপস্থিত প্রকৌশলীরা। সেমিনারে পেশাজীবিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, তাজমেরী ইসলাম, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, অধ্যাপক অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, মাহফুজ উল্লাহ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী। /আরএ Comments SHARES জাতীয় বিষয়: ইভিএম ব্যবহার করলে মামলা করবে ঐক্যফ্রন্ট!