কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সরকারি চাল-আটা কালোবাজারে; র্যাবের অভিযানে উদ্ধার ২১৫ টন নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৮ স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি খাদ্যগুদামের চাল-আটা পাচার হয়ে কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে এমন খবরে পেয়ে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে উদ্ধার করা হয় ২১৫ মে.টণ চাল ও আটা। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সরকারি এ খাদ্যদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। গত শনিবার রাতে তেজগাঁও সরকারি খাদ্যগুদামে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই শত শত বস্তা চাল-আটা পাচারের উদ্দেশে ট্রাকে তোলার দৃশ্য দেখতে পায়। অন্যদিকে শনিবার রাতেই রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অভিযান চালানো হয়। সব মিলিয়ে গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মোট ২১৫ মে. টন চাল ও আটা উদ্ধার করা হয়েছে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তেজগাঁও সরকারি খাদ্যগুদামের ব্যবস্থাপক হুমায়নসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। জানা যায়, চালের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে ৩৯ টাকা কেজি দরে কেনা এই চাল খোলাবাজারে ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। আর ৩২ টাকা কেজি দরে কেনা আটা ১৬ টাকায় বিক্রি করা হতো। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, রাজধানী ও আশপাশের স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির জন্য চাল ও আটা তেজগাঁও সরকারি খাদ্য গুদামে মজুদ ছিল। সেখান থেকে ২১৫ মে. টন চাল ও আটা কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এসব চাল ও আটা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ওএমএসের ব্যানার টানিয়ে ১৪১টি ট্রাকে বিক্রি করার কথা ছিল। তিনি বলেন, শনিবার রাতে খাদ্যগুদাম থেকে আটটি ট্রাকে ভর্তি করে চাল ও আটা পাচারের সময় ১১৫ টন জব্দ করা হয়। ওইসব চাল ও আটা চুয়াডাঙ্গা, শ্রীমঙ্গল ও মাওনাতে পাচার করা হচ্ছিলো। বাকি ১০০ টন উদ্ধার করা হয় মোহাম্মদপুর থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক র্যাব কর্মকর্তা বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষ তুলনামূলক কম দামে এসব খাদ্যপণ্য কিনে পরিবার নিয়ে বেঁচে আছে। কিন্তু ঘৃণ্য চক্র তাদের সেই খাদ্যপণ্য কালোবাজারে বিক্রি করে নিজেরা লাভবান হওয়ার পাঁয়তারা করেছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষি মার্কেটের উদ্ধার করা ওএমএসের চালসহ ট্রাক সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করে রাখা হয়েছে। উদ্ধার করা চালের বস্তার উপর লেখা ‘খাদ্য অধিদপ্তর’। গুদাম থেকে সড়ক ও আশপাশে র্যাব সদস্যরা কড়া পাহাড়ায় রয়েছেন। এই নিয়ে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যেও কথা হয়। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি গুদাম থেকে ওএমএসের চাল কিভাবে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের বেসরকারি গুদামে গেল তার তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত করে এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের কাজ করবে না। ব্যবস্থাপক হুমায়ন কবিরসহ দুইজনকে আটক করে র্যাব হেফাজতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে জানিয়ে এক র্যাব কর্মকর্তা বলেন, এই চাল গুদামজাত করা থেকে শুরু করে অনৈতিক কাজের সঙ্গে আরো কারা কারা জড়িত আছে তাদের নাম বলেছে। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির কয়েক শ’ মেট্রিকটন চাল জব্দ করা হয়। পরে তদন্ত করে র্যাব জানতে পারে খাদ্য গুদামের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ওই পাচারের সাথে জড়িত। /এমএম Comments SHARES জাতীয় বিষয়: কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সরকারি চাল-আটা কালোবাজারে; র্যাবের অভিযানে উদ্ধার ২১৫ টন