ভৈরবে গৃহকর্মীকে লাঠিপেটা ও গরম পানি ঢেলে নির্যাতন, স্বামী-স্ত্রী আটক

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯

ভৈরবে সাদিয়া বেগম (১৮) নামের গৃহকর্মীকে লাঠিপেটা ও গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী ও স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। গৃহকর্মী ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার সিঙ্গেরকান্দা গ্রামের মৃত জামাল মিয়ার মেয়ে সাদিয়া (১৮)।

১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মধ্যরাতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুজ্জামানের উপস্থিতিতে পুলিশ ভৈরব বাজারের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার মেয়ে গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপি ও তার স্বামী ঘোড়াকান্দা এলাকার উছমান মিয়ার ছেলে সাদলীকে তার বাজারের বাসা থেকে আটক করে।

জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার ভৈরব বাজারের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার কন্যা গৃহকর্তী মেহেরুন্নেছা অপি কাজের সময় একটি চুড়ি ভাঙ্গার অপরাধে গৃহকর্মী সাদিয়ার পিঠে লাঠিপেটাসহ হাতে গরম পানি ঢেলে ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতন করে। এরপর রাতে গোপনে সে বাসা থেকে পালিয়ে খালার ভাড়া বাসায় আশ্রয় নেয়। রাত সাড়ে ৮টায় আহত সাদিয়ার খালা ভৈরব পৌর প্যানেল মেয়র মো. আল-আমিনের সহায়তায় ও পরামর্শে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।

আহত সাদিয়া জানান, সাত বছর আগে সে তার দুঃসম্পর্কের এক খালার মাধ্যমে ভৈরব বাজারের গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপির বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে কাজ পায়। প্রথম দিকে তাকে কাজের জন্য কোন নির্যাতন করা হতনা। কয়েক বছর যাওয়ার পর কাজ করতে গিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় যখন তখন তাকে মারধরসহ প্রায়ই তার হাতে গরম পানি ঢেলে ছ্যাকা দিত। অনেক সময় তার হাত পা বেঁধে মারধর করত। তাকে বাসার বাইরেসহ বাড়িতে যেতে দিতনা। গৃহকর্ত্রী বাসার বাইরে গেলে তাকে তালাবদ্ধ করে ঘরে রেখে যেত।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. ফেরদৌস হায়দার জানান, সাদিয়ার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাত গুলো গুরুত্বর বলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রাখা হয়েছে।

১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর প্যানেল মেয়র মো. আল-আমিন জানান, গৃহকর্মী নির্যাতন একটি ন্যাক্কার জনক ঘটনা। তার স্বজনরা আমাকে জানালে আমি গৃহকর্মীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে পরামর্শ দেয়।

ভৈরব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহলুল খান বাহার জানান, খবর পেয়ে থানার উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন হাসপাতালে গিয়ে সাদিয়ার শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। পরবর্তীতে গৃহকর্ত্রী অপি ও তার স্বামী সাদলীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুজ্জামান বলেন, গৃহকর্মী নির্যাতন একটি জঘন্যতম অপরাধ। ঘটনার পর থেকে গৃহকর্ত্রী দরজা গেইট বন্ধ করে ঘরে বসে ছিল। খবর পেয়ে আমি যাওয়ার পর পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

Comments