খুলনায় হঠাৎ বেড়ে চলে‌ছে চালের দাম

প্রকাশিত: ১:০০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০১৯

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধিঃ হঠাৎ করেই খুলনাঞ্চলের বাজারে চালের দাম বেড়েছে। এ বৃদ্ধির হার কেজি প্রতি গড়ে ৪ টাকা। ভারতীয় চালের আমদানী কম থাকা, বাজার মন্দাভাব এবং উত্তরাঞ্চলের চাল না আসা দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। সরকারের সঠিক মনিটরিং না থাকায় ভরা আমন মৌসুমেও অতি মুনাফালোভীরা চালের দাম বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন ক্রেতারা। কৃষকদের সূত্র থেকে জানা যায়, চলছে আমনের ভরা মৌসুম। খুলনাঞ্চলে ধান চাষের জন্য বিখ্যাত গোপালগঞ্জ, নড়াইল, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও যশোরের প্রান্তিক চাষিদের ঘরে উঠেছে এখন আমন ধান। বাজারেও এ চাল চলে এসেছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশী। এরপরও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।


নগরীর বড় বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, পরিবহন সংকটসহ বিভিন্ন কারণে বেশ কিছু দিন যাবত উত্তরাঞ্চল থেকে চাল আসা বন্ধ ছিল। এছাড়াও ভারত থেকেও চাল আসছে কম। এসব কারণে বাজারে চালের মূল্য একটু বেশী। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহখানেক ধরেই বাজারে চালের দাম বাড়ছে। শুক্রবার পর্যন্ত তা’ বেড়ে গড়ে ৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এরমধ্যে মোটা স্বর্ণা ২৮ থেকে বেড়ে ৩২ টাকায়। বালাম আঠাশ ৩৬ থেকে বেড়ে ৪০ টাকায়। মিনিকেট ৪৮ এখন ৫২ টাকা, বাসমতি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা থেকে ৫৯ টাকা। ইরি আতপ ২৩ থেকে ২৮ টাকায়। কালোজিরা প্রকারভেদে ৭৩-৮৭ টাকা থেকে ৭৫-৯০ টাকায়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুহাম্মাদ তানভীর রহমান জানান, আমন সংগ্রহের মৌসুমে সরকারি ক্রয় মূল্য বেশি হওয়ায় বাজারে চালের দাম বেড়ে থাকতে পারে। সিদ্ধ চালের সরকারি ক্রয়মূল্য কেজি প্রতি ৩৬ টাকা। জেলা খাদ্য দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী খোলাবাজারে ডিসেম্বরের তুলনায় এ মাসে সিদ্ধ চালের ক্রয়মূল্য গড়ে ২ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আতপ চাল ৩০ টাকার পরিবর্তে ৩১ টাকা, মোটা চাল ৩৩-৩৪ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, মাঝারি চাল ৩৯ টাকার পরিবর্তে ৪১ টাকা এবং চিকন চাল ৫০ টাকার পরিবর্তে ৫২ টাকা বিক্রি হচ্ছে।


খুলনা অটো রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, আমন সংগ্রহ অভিযান শুরুর পর থেকে ধানের দাম বেড়েছে। নড়াইল ও গোপালগঞ্জ থেকে আসা ধান থেকে উন্নতমানের চাল পাওয়া যাচ্ছে। ধানের দাম বাড়ায় কৃষক আমনের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। জেলার ১২৩টি রাইস মিলের কোনোটাই এবার লোকসানে নেই।


নগরীর বড় বাজারে চাল কিনতে আসা কর্মজীবী মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, গ্রামের প্রত্যেক কৃষকের ঘরে এখন ধান রয়েছে। যার জমি নেই তারও ঘরে ধান। বছরের এই সময়টাতে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের ঘরে ফসল থাকে। সে হিসেবে বাজারে চাহিদাও কম। তারপরও চালের দাম বেড়ে চলেছে। সরকারি দপ্তরগুলোর যথাযথ তদারকির দাবি করেন তিনি।

Comments