অসুস্থ নারীর পেটে পুলিশের লাথি

প্রকাশিত: ১০:৩১ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি:  যশোরে পুলিশের বিরুদ্ধে অসুস্থ নারী সুফিয়া খাতুনের (৫৫) পেটে লাথি মারার অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শহরের খড়কি হাজামপাড়া এলাকায় শ্রাবণী নামে মহিলাকে ধরতে গিয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার এএসআই বিপ্লব ও এএসআই ইকবাল ওই নারীর পেটে লাথি দেন বলে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। সুফিয়া খাতুন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি ওই এলাকার আবদুল হামিদের বাড়ির ভাড়াটিয়া ইনসার আলীর স্ত্রী। বিষয়টি পুলিশের হেড কোয়ার্টার পর্যন্ত গড়িয়েছে।

আহত সুফিয়া খাতুন জানান, সাদা পোশাকে দুই পুলিশ আমাদের বাসায় গিয়ে প্রতিবেশি আসাদের স্ত্রী শ্রাবণীকে খুঁজতে থাকে। পুলিশ আমাকে জিজ্ঞেস করে সে কোথায়। আমি বলি জানি না।

এরপর ওই মহিলার স্বামীর নাম জিজ্ঞেস করে। আমি বলতে পারি নাই। কেননা ওই সময় শ্রাবণীর স্বামীর নাম তিনি জানতেন না। এরমধ্যে আমার ছেলে রকিবকে সিগারেট কিনতে পাঠায় পুলিশ। আমার ছেলে ফিরে এসে দেখে পুলিশ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে।

এসময় ছেলে প্রতিবাদ করলে, তার হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেয়। আমি এগিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ করি। আমার ছেলেকে কেন ধরে নিয়ে যাচ্ছো। এইসময় পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই বিপ্লব আমার তলপেটে জোরে লাথি মারে। তখন আশপাশের আরো ভাড়াটিয়া জড়ো হয়ে যায়।

এরপর পরিস্থিতি খারাপ দেখে পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়। তিনি আরো জানান, আমার পেটে টিউমার থাকায় শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছি। পুলিশ অসুস্থ অবস্থায় আমাকে লাথি মারলো। পুলিশের লাথির আঘাতে তিনি আহত হন।

শুক্রবার সকালে তিনি আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডের ২৫ নম্বর বেডের পাশে মেঝেতে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন।

স্বামী নেছার আলী বলেছেন, তিনি মাটি কাটার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তার স্ত্রীর পেটে আগে থেকে সমস্যা ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের রক্তও দেয়া হয়। রাতে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়ি ফিরে তিনি শোনেন পুলিশ তার স্ত্রীর পেটে লাথি মেরেছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে এক অন্তঃসত্বা নারীর পেটে পুলিশ লাথি মেরেছে বলে অভিযোগ আসে পুলিশের কাছে। বিষয়টি একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও জানানো হয় । পরে কোতয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান হাসপাতালে গিয়ে ওই নারী সাথে কথা বলেন। পরে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল গোলাম রাব্বানী। তারা আলাদা ভাবে ওই নারীর সাথে কথা বলেছেন।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রাব্বানী জানিয়েছেন, ঘটনা জানতে পেরে ওই নারীর সাথে কথা হয়েছে হাসপাতালে। একজন পুলিশ তাকে চড় মারতে হাত মুখের কাছে নিয়ে যায়। তদন্ত করে পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন

Comments