ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত শুরু

প্রকাশিত: ১:২১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৯

মো. ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বহরমপুর গ্রামে গরু জব্দ করাকে কেন্দ্র করে বিজিবি-গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্টেট নুর কুতুবুল আলম। তদন্ত কমিটির অন্য ৬জন সদস্য হলেন, পীরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ঠাকুরগাঁও সেক্টর সদর দপ্তর বিজিবির সহকারী পরিচালক, ঠাকুরগাঁও পাবলিক প্রসিকিউটর, হরিপুর থানার ওসি, স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটির প্রধান জানান, বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষের ৩ জন নিহত ও ১৫ জন আহতের ঘটনায় আনুষ্ঠানিক ভাবে তদন্ত শুরু করা হলো। ঘটনাস্থল চারপাশ পরিদর্শন করেছে তদন্ত কমিটি।  ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে৷

তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষে নিহত ও আহতদের পরিবারের মধ্যে যারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাদের সাক্ষ্য প্রথমে এবং এলাকার লোকজন যারা ঘটনা দেখেছেন তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। প্রথম দিনে ৮ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। এছাড়াও যারা গোপনে সাক্ষ্য প্রদানে ইচ্ছুক তাদের সাক্ষ্য গোপনে নেয়া হবে।

এদিকে এদিন সকালে বিজিবির প্রায় ১৫০ জন সদস্য মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে এসে হরিপুরের বহরমপুর গ্রামের হবিবর রহমান ও জসিমকে ক্যাম্পে নিয়ে যান। তাদেরকে ঘটনার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের পর আবার পুনরায় গ্রামে দিয়ে যাওয়া হয়।

পরে হবিবুর রহমান জানান, দুপুরে হঠাৎ বিজিবি এলকায় প্রবেশ করে আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ক্যাম্পে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা শেষে আমাকে আবার গ্রামে দিয়ে যায়।

ঘটনার পর পুনরায় বিজিবির সদস্যদের মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করে টহল দেওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছে এলাকার লোকজন। তাদের দাবি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হতে দেওয়ার জন্য বিজিবির সদস্যরা দলবেধে এসে এলাকার লোকজনকে ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রামে দিয়ে যাচ্ছেন। বিজিবির লোকজন যেন ওই গ্রামে না প্রবেশ করে এবং এলাকার লোকজনকে বিনা কারণে ক্যাম্পে ধরে না নিয়ে যায় এ জন্য জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

এর আগে ওই ঘটনায় নিহতদের লাশ পরিবারের হস্তান্তর করার পর ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেন। তদন্ত কমিটি ৩ দিনের মধ্য তদন্ত শেষ করে তার প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিবেন। পাশাপাশি নিহতদের লাশ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা নিহতদের পরিবারকে প্রদান করেন।

উল্লেখ, চলতি মাসের ১২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বহরমপুর গ্রামে গরু জব্দ করাকে কেন্দ্র করে বিজিবি সদস্য এবং গ্রামবাসীর সংঘর্ষে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র, শিক্ষকসহ ৩ জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন ১৫ জন। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় বিজিবি বাদী হয়ে নিহতরাসহ প্রায় ২৫০ জনের বেশি গ্রামবাসীকে আসামি করে হরিপুর থানায় একটি মামলা করে।

/সিএইচ

Comments