নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর ৯ নির্দেশ

প্রকাশিত: ১২:৩৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০১৯

ডেস্ক: নিরাপদে সড়ক পারাপার নিশ্চিতে ফুটওভার ব্রিজে চলন্ত সিঁড়ি যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পথচারীদের দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মুহাম্মদ আতিকুল ইসলামকে আরো আটটি নির্দেশনা বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তাকে যে ৯টি নির্দেশনা দেন। সে গুলো হচ্ছে:

১. রাজধানীর সকল ফুটওভার ব্রিজে পর্যায়ক্রমে এস্কেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি) স্থাপন করতে হবে।
২. জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করে পথচারীদের নিরাপদ পারাপার নিশ্চিতে উন্নত বিশ্বের মতো পুশবাটন সিস্টেম এবং পথচারী পারাপারের সময় ফ্ল্যাশলাইট জ্বালানোর সিস্টেম স্থাপন করতে হবে।

৩. মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এমআরটি, পুলিশ ও বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্ডারপাস নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক কমিউনিটি পুলিশ প্লেকার্ড হাতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে নিরাপদ পারাপারের জন্য পথচারীদের সচেতন করতে হবে।
৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোডে, গাড়ির গতি কমানোর জন্য র‌্যাম্বেল স্ট্রিপ (Ramble Strip) নির্মাণ করতে হবে।

৬. শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। ট্রাফিক পুলিশ এই কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করবে। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এই কাজে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৭. বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ দেশের বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলায় গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিআরটিএ’র সাথে যোগাযোগ করে এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান সংগ্রহ করতে হবে।
৮. সম্প্রতি লক্ষ করা গেছে পথচারীরা মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে কিংবা হেডফোন কানে দিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের জন্য টিভিসি কিংবা এভি তৈরি করতে হবে।

৯. যানজট নিরসনে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার যেন কমানো যায়, সে ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের আনা নেওয়ায় অভিভাবকদের ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমাতে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক ঠিকানার ডাটাবেজ সংগ্রহ করে রুটম্যাপ নির্ধারণ করে স্কুল বাস দেওয়া হলে ঢাকা শহরে যানজটের মাত্রা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অভিভাবকদের জন্য একটি নিরাপদ এবং অর্থসাশ্রয়ীও হবে। একটি বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করে করপোরেট স্কুল রেসপনসিবিলিটি বা স্পন্সরের মাধ্যমে ধারণাটি বাস্তবায়ন করার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর এরই মধ্যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ডিএনসিসি। তারা জানিয়েছে, বর্তমানে ৫২টি ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ফুটওভার ব্রিজে এস্কেলেটর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৭টি ফুটওবার ব্রিজ নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

ডিএনসিসি আরও জানিয়েছে সংস্থাটিতে বর্তমানে ১১১টি জেব্রাক্রসিং স্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে। এর মধ্যে নতুনভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে ২৮টি। বাকি ৮৩টি জেব্রাক্রসিং আবহাওয়া অনুকূলে আসলে স্থাপন করা হবে। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এগুলো স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এছাড়া ৪৬টি ফুটওভার ব্রিজ ও ১০টি আন্ডারপাস, ৩১টি স্পিডব্রেকার, ১১৪টি জেব্রাক্রসিং, ৪২৬টি ট্রাফিক সাইন ও ৫২টি যাত্রী ছাউনি নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আতিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি আমাকে পর্যায়ক্রমে সব ফুটওভার ব্রিজে এস্কেলেটর স্থাপন ও জেব্রাক্রসিংয়ে পথচারী পারাপারের সময় পুশবাটন সিস্টেম এবং ফ্ল্যাশলাইট জ্বালানোর সিস্টেম স্থাপন করতে বলেছেন।

ফুটওভার ব্রিজে চলন্ত সিঁড়ি স্থাপন ছাড়াও পথচারী পারাপারে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে আন্ডারপাস নির্মাণসহ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে সিটি করপোরেশন।

/এ

Comments