রুমিনের এক কথায় প্রথম দিনেই উত্তপ্ত সংসদ

প্রকাশিত: ১১:৩৮ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০১৯

ডেস্ক: বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও দলের সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার এক বক্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদ।

সংসদে যোগ দিয়ে প্রথম দিন শুভেচ্ছা বক্তা হিসেবে বলার সুযোগ নিয়ে রুমিন বলেন ‘একাদশ জাতীয় সংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়।’ এ সময় সংসদ কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রুমিনের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

মঙ্গলবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদের বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে।

বিএনপির এই এমপি প্রায় আড়াই মিনিট বক্তব্য রাখলেও সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিদের চিৎকার, চেঁচামেচি ও প্রতিবাদের কারণে সংসদ কক্ষে কেউ রুমিনের বক্তব্য ভালোভাবে শুনতে পাননি। এ সময় স্পিকার সরকারি দলের সদস্যদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানালেও কেউ কর্ণপাত করেননি।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আজকে সংসদে আমার প্রথম দিন। যে কোনো রাজনীতিবিদের মতোই সংসদে আসা, সংসদে দেশের কথা, মানুষের কথা বলা আমার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, আমি এমন একটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছি, যেই সংসদটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। নির্বাচনের পরপরই যদি আপনারা টিআইবির রিপোর্ট দেখেন, যদি আপনারা বিদেশি গণমাধ্যম দেখেন, যদি আপনারা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেখেন, যদি আপনারা নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট দেখেন, আপনারা দেখবেন এই সংসদটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সুতরাং আমি খুশি হবো যদি এই সংসদের মেয়াদ আর একদিনও না বাড়ে।’

তিনি বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার আমি এমন একটি সংসদে দাঁড়িয়ে আছি যেই সংসদে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, আপসহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের জন্য যিনি বারবার কারাবরণ করেছেন, বাংলাদেশের মানুষের, গণমানুষের নেত্রী, যিনি জীবনে কোনো দিন, কোনো আসন থেকে কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি- সেই বেগম খালেদা জিয়া এই সংসদে নেই।

তাকে পরিকল্পিতভাবে, একটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলায় আজকে কারাগারে ১৬ মাসের অধিক সময় আটকে রাখা হয়েছে। একজন আইনজীবী হিসেবে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই যে, বেগম খালেদা জিয়ার মামলার যে ম্যারিট, তার শারীরিক অবস্থা, তার সামাজিক অবস্থান এবং তার যে বয়স, সবকিছু বিবেচনায় তিনি তাৎক্ষণিক জামিন লাভের যোগ্য।’

‘সরকারের হুমকিতে আমাদের অ্যাকটিং চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারেন না। আমাদের শীর্ষ থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত একেকজনের নামে শত শত মামলা। মাননীয় স্পিকার তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে একজন সজ্জন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত’- বলেন তিনি।

এই পর্যন্ত বলার পর সময় শেষ হওয়ায় স্পিকার তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বক্তব্য শেষ করার কথা বলে বলেন, বক্তব্য শেষ করুন। পরে আবার বলার সুযোগ পাবেন।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বক্তব্যের পর ফ্লোর নিয়ে প্রতিবাদ করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, উনি একটি গণতান্ত্রিক দেশের… নিজেও শপথ নিয়ে অবৈধ বলায় ১৬ কোটি মানুষকে অসম্মান করেছেন। তাই আমি তার বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানাচ্ছি।

এর পরিপ্রেক্ষিতে স্পিকার বলেন, সংসদের কার্যপ্রণালির ৩০৭ বিধি অনুযায়ী, তার বক্তব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যদি কোনো অসংসদীয় কিছু পাওয়া যায় তাহলে এক্সপাঞ্জ করা হবে।

Comments