রিপার খুনিরা আটক হচ্ছে না; সন্দেহভাজন যুবক পুলিশ হেফাজতে

প্রকাশিত: ৬:২০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি: যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির বাগডাঙ্গা সরদারপাড়ায় গৃহবধূ রিপার (২২) নৃসংশ্য খুনিরা আটক হচ্ছে না। ধানক্ষেত থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের ৫ দিন অতিবাহিত হলেও মামলার দুই আসামি রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

তবে সন্দেহভাজন রফিুকুল নামে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু তার কাছ থেকে হত্যা সম্পর্কে কোন তথ্য মিলেছে কিনা এই বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিুপ রয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সুকুমার কুমার কুন্ডু জানান, এজাহারনামীয় আসামীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, অভিযোগ উঠেছে, বাগডাঙ্গার কয়েকজন প্রভাবশালী আসামিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হত্যা ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচারে লিপ্ত রয়েছে।

স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, যখন রিপার মৃতদেহ উদ্ধার হয় তখন ঘটনাস্থলে ছিলেন তার শাশুড়ি সুন্দরী। আর চুড়ামনকাটি বাজারে অবস্থান করছিলেন তার স্বামী ইমরান। কিন্তু ওইদিন রাত ৯ টার পর থেকে তারা গাঁ ঢাকা দেয়।

এরআগে দুপুরেও ইমরান ১ম স্ত্রী রিপা নিখোঁজের ঘটনায় জিডি করবে এমন কথা বলেতেও শুনেছে তার মুখে। এখন তার হয়ে এলাকার একটি মহল প্রচার করছে রিপার পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো। স্বামী ইমরানের অজান্তে পরকীয়া প্রেমিক তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রেখে যেতে পারে।

তবে এলাকাবাসী তাদের কথায় কান দিচ্ছেন না। তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রিপার চরিত্র খারাপ ছিলো না। হত্যার ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে ইমরানের পক্ষে ওই মহল রিপার চরিত্র নিয়ে মিথ্যাচার করছে। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে এই মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

তবে পুলিশ এই খুনের ঘটনা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছেন বলে দাবি করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুকুমার কুমার কুন্ডু। তিনি সাংবাদিকদের জানান, খুনের রহস্য উদঘাটন ও এজাহারনামীয় আসামিদের আটকে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু তারা আত্মগোপনে রয়েছে। ইমরানকে আটক করতে পারলেই খুনরে ঘটনাটি পরিস্কার হতে পারে।

তবে সন্দিদ্ধ হিসেবে রফিকুল ইসলাম নামে এক যুবককে বুধবার বিকেলে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধারের আগের দিন রফিকুলের সাথে রিপার ১৮ মিনিট মোবাইলে কথাপকথন হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা সম্ভব না।

রফিকুল ইসলাম বাগডাঙ্গা সরদারপাড়ার মৃত আলী হোসেনের ছেলে বলে জানা গেছে। কিন্তু তার পরিবার দাবি করেছে, রিপা খুন হওয়ার বিষয়ে রফিকুল কিছুই জানে না। ইমরানের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার সুবাদে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে রেখেছে।

মামলার বাদি মোশারফ মিয়া সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়েকে নৃসংশ্যভাবে খুন কার হয়েছে। তার দাবি খুনিদের আটক করে সর্বোচ্চ শান্তির ব্যবস্থা করা হোক।

উল্লেখ্য, ৭ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলো গৃহবধূ রিপা। ৮ এপ্রিল বিকেলে তার মৃতদেহের সন্ধ্যান মেলে বাগডাঙ্গা সরদারপাড়া বিল সংলগ্ন একটি ধান ক্ষেতে। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় পুলিশ তার মতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এই ঘটনায় নিহতের পিতা ঝিকরগাছা উপজেলার বিষেহরি গ্রামের মোশারফ মিয়া বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহতের স্বামী বাগডাঙ্গা গ্রামের ইমরান ও শাশুড়ি রিজিয়া বেগম ওরফে সুন্দরীসহ অজ্ঞাত দুই তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় বলা হয়, ২য় বিয়ের ঘটনা জানার পর প্রতিবাদ করায় রিপার ক্ষুব্ধ স্বামী ইমরান তার মা সুন্দরীসহ অজ্ঞাত আসামিদের সহায়তায় তাকে নৃসংশ্যভাবে খুন করেছে।

/আরএ

Comments