রায়পুরে চিকিৎসক-নার্স সংকটে ব্যাহত চিকিৎসাসেবা, দুর্ভোগে রোগীরা

প্রকাশিত: ২:০৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০১৯

মুহাম্মদ নোমান ছিদ্দীকী, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স ও লোকবলের অভাবে আর অনিয়ম-অবস্থাপনায় চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিকল হয়ে আছে এক্স-রে মেশিন। একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটিও বিকল হয়ে পড়ে আছে। নষ্ট হয়ে আছে জেনারেটর। হাসপাতালের খাবার ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

জানা যায়, উপজেলার পৌর শহরসহ আরো ১০টি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ০৪ লাখ মানুষ এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতেল ২২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কাগজে কলমে আছে ৯ জন কিন্তু বাস্তবে আছে ৪ জন। ১৪ জন নার্সের মধ্যে আছে মাত্র ৭ জন। টেকনিশিয়ান, অপারেটর ও সুইপারসহ রয়েছে লোকবলের তীব্র সংকট।

এখানে বহির্বিভাগে ২৫০ থেকে ৩৫০জন রোগী প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা নিতে ভিড় করছেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় অনেকেই চিকিৎসা না নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন। কেউ বা প্রাইভেট হাসপাতালে কোনো রকম চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের রোগী রোজিনা আক্তার জানান, বুক ও পেট ব্যাথা নিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন কিন্তু কয়েকঘন্টা অপেক্ষা করে ডাক্তার না পেয়ে চলে যান। এরকম একাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার কথা জানান।

উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের একাধিক কর্মকর্তা ও ওয়ার্ডবয় জানান, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট হয়ে আছে। দরিদ্র অসহায় রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জেনারেটরটিও নষ্ট হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।

হাসপাতালে বিদ্যুৎ না থাকলে রাতে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। এ সুযোগে মাদকসেবীরা হাসপাতাল আঙিনায় আড্ডা মারেন বলেও শোনা যায়। সরকারী একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটিও নানা অজুহাতে বন্ধ হয়ে আছে। ফলে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের সেবা নিতে গিয়ে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে রোগীদের।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ জাকির হোসেন জানান, স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার নিয়ে তাদের প্রতিদিন শত শত রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। ডাক্তারসহ জনবল সংকটের কথা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এক্স-রে মেশিন চালানোর অপারেটর না থাকায় চিকিৎসা সেবায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে বলেও তিনি জানান

/আরএ

Comments