নারীসহ আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল, বরখাস্ত ২ পুলিশ

প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: ঝিনাইদহে নারীসহ আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের জেলা পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে।

তারা হলেন সদর থানার এএসআই মো. রাজু আহম্মেদ ও কনস্টেবল মুসা তারেক।

২৬ জানুয়ারি পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান তাদের বিরুদ্ধে এ আদেশ জারি করেন। মঙ্গলবার এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরের দিকে ঝিনাইদহ সরকারি নুরুননাহার মহিলা কলেজের মাস্টার রোলের কর্মচারী (এমএলএসএস) মো. আলমগীর হোসেনকে ব্ল্যাকমেল করতে দুজন অপরিচিত নারী পাঠানো হয়।

তারা প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। ওয়াশরুমের দিকে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক সেখানে এসে হাজির হন সদর থানার এএসআই মো. রাজু আহম্মেদ, কনস্টেবল মুসা তারেক ও তাদের সহযোগী সদর থানার সিভিল টিমের মাইক্রোবাসচালক তুষার আহম্মেদ।

তারা গিয়েই কলেজের নিচতলার ১০৫ নম্বর রুমের পাশে এমএলএসএস মো. আলমগীর হোসেনকে মারপিট করতে থাকেন। জোর করে পরনের কাপড় খুলে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে আসা ওই দুই নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ধারণ করেন তারা।

এরপর হাতকড়া পরিয়ে একটি ইজিবাইকে করে থানায় নেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকেন। আলমগীরের ভাগ্য ভালো। তার ডাকচিৎকারে সেখাসে (ক্যাম্পাসে) ছুটে আসেন কলেজ হোস্টেলের এক নারী কর্মচারীসহ এলাকার লোকজন। সবার সামনে আলমগীরকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়।

উপস্থিত লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বিপদ টের পেয়ে এএসআই মো. রাজু আহম্মেদ ও কনস্টেবল মুসা তারেক মোটরসাইকেলে চড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। দুই নারীও সটকে পড়েন। তার আগে আলমগীরের পকেটে থাকা মাত্র ৩০০ টাকা কেড়ে নেন তারা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ওইদিনই তাকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ২৬ জানুয়ারি শৃঙ্খলাবহির্ভূত এবং পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সদর থানার এএসআই মো. রাজু আহম্মেদ ও কনস্টেবল মুসা তারেককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশ দেন পুলিশ সুপার। তাদেরকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়।

তদন্ত চলছে, শেষ হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মনিরুল আলম মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় পুলিশের একটি অসৎ চক্র দীর্ঘদিন ধরে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কাজে চিহ্নিত একশ্রেণির নারীদের ব্যবহার করে আসছিল। চক্রটির অত্যাচার নিপীড়ন চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন শত শত নিরীহ মানুষ। রক্ষা পাননি জনপ্রতিনিধি, সরকারি দলের নেতাকর্মী সমর্থক।

/সিএইচ

Comments