বাংলাদেশের উন্নয়ন ও দেশের মানুষের শান্তিতে ‘গবেষণা’র কোনো বিকল্প নেই: প্রধানমন্ত্রী নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৯ একুশ সংবাদ: দেশের গবেষক ও বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি। এমনভাবে গবেষণা চালাতে হবে যেন এক সময় আমরা এ দেশ থেকেই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পারি। এ জন্য মহাকাশ নিয়েও গবেষণা প্রয়োজন। তখন আমরাও মহাকাশে উড়তে পারবো, যেতে পারবো। আমাদের ছেলেমেয়েরা খুব মেধাবী। বিশ্বের উন্নত দেশের ছেলেমেয়েদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বুধবার (১০ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে-বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণায় চেকপ্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে দেশ ও দেশের মানুষের শান্তিতে গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দেশের তরুণদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গবেষণা করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। সবকিছুতেই সফলতা অর্জন করতে হলে অতীত জানার প্রয়োজন। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন তা সবারই জানা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন গৌরব আমাদের চলার পথে অনুপ্রেরণা জোগাবে। এসব জানতে হলে গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। এটা নিয়ে গবেষণা করে আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারি। এ জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সমুদ্রবিজ্ঞান সাবজেক্ট চালু করা হয়েছে, হচ্ছে। সমুদ্র গবেষণার মাধ্যমে আমরা অমূল্য সম্পদ অর্জন করতে পারবো। শেখ হাসিনা বলেন, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। সবার হাতে স্মার্টফোন। মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। মহাকাশ জয় করেছি। এ ছাড়া আমাদের মহাকাশ গবেষণা প্রয়োজন। হয়তো আমরা মহাকাশে যেতে পারব। সবকিছু থেকে বের হওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে গবেষণা। এ লক্ষ্যে আমরা এ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ চালু করেছি। তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা যখন একটা যুদ্ধবিধস্ত দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাকে। সেদিন পুরো পরিবারকে হারাই আমি। এসব আমাদের নতুন প্রজন্মের জানা দরকার। বোঝা দরকার জাতির পিতা দেশের জন্য কী কী করে গেছেন। তিনি যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন আমাদের সে স্বাধীনতা গৌরবের। বিএনপির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা দেশের উন্নয়নের চিহ্ন রাখতে পারেনি। তারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। তারা দেশের উন্নয়ন করবে কী করে? ক্ষমতায় এলে নিজের পকেট ভরতে ব্যস্ত হয়ে যায় বিএনপি। তিনি বলেন, আজ ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন হয। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর আজকের এ দিনে সরকার গঠিত হয়। পরে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামে এ মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান শর্ত হচ্ছে গবেষণা বিজ্ঞানীদের নতুন আবিষ্কার এবং গবেষণার ফলে বাংলাদেশ আজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এ জন্য আমরা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। এখান থেকে বিভিন্ন গবেষকদের বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে এ ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছিলো। যে কারণে অনেকের লেখাপড়া এবং গবেষণা বন্ধ হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ খুব কষ্টে নিজেদের অর্থ ব্যয় করে গবেষণা এবং লেখাপড়া শেষ করে এসেছে। আসার পর অনেকে চাকরি হারিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো। এজন্য এসময়কে আমরা মুজিব বর্ষ ঘোষণা করেছি। আমাদের সন্তানরা যেন একটি উন্নত দেশ পায় এজন্য আমরা ডেল্টা প্লান ২১০০ প্রণয়ন করেছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি, কবি ও ছড়াকার ইয়াফেস ওসমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক। /আরএ Comments SHARES জাতীয় বিষয়: