মাদরাসা ছাত্রী হত্যা চেষ্টা মামলায় ৭ জন আটক, গ্রেফতার ২

প্রকাশিত: ১০:০৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে মাদরাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, এছাড়াও জিজ্ঞাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে আরো পাঁচজনকে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন: ওই মাদ্রাসার ইংরেজির প্রভাষক আফছার উদ্দিন (৩৩), আলিম পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম (২২), মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা (৩৮), অফিস সহকারী নুরুল আমিন (৫০) এবং স্থানীয় আলাউদ্দিন (২৫), সাইদুল ইসলাম (২১), জসিম উদ্দিন (৩০)।

ঘটনার দিন থেকে শুরু করে সোমবার পর্যন্ত থানা-পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এই সাতজনকে আটক করেছে। তবে এঁদের মধ্যে আফছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার তিনদিন পর গতকাল সোমবার বিকেলে থানায় পাঠানো ছাত্রীর ভাইয়ের লিখিত অভিযোগকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় চারজন অজ্ঞাতনামা ছাত্রীসহ তাদের সহযোগীদের আসামি করা হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ মার্চ তারিখে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করার পর থেকে নুর উদ্দিন, জাবেদ, শাহাদাত হোসেন শামীম, মহি উদ্দিন শাকিলসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়।

ওই ছাত্রীর ভাই বলেন, তাদের ধারণা হুমকিদাতাদের যোগসাজশে চারজন তার বোনকে পরিকল্পিতভাবে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্য থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুজনকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে মর্মে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পূর্বের খবর..,
নুসরাতকে সিঙ্গাপুর পাঠাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মায়ের করা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর অধ্যক্ষের পক্ষে-বিপক্ষে, মুক্তি-শাস্তির দাবি উঠে। অধক্ষ্যের পক্ষের লোকেরা নুসরাত ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বলে।

এরই প্রেক্ষিতে শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান ওই ছাত্রী। এসময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে রাফি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যায়।

সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচ জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ফেনী থেকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

নুসরাতের স্বজনদের অভিযোগ, শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা তার অনুসারীদের দিয়ে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালান।

/আরএ

Comments