বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে মশারি বিহীন চিকিৎসা সেবা

প্রকাশিত: ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯

বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মশারি বিহীন চলছে চিকিৎসা সেবা। বর্তমান ডেঙ্গুর ভয়ানক রুপ ধারণ করলেও এ হাসপাতালে নেই কোন মশারির ব্যবস্থা। আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে রোগীদের। মশারি সরবরাহ না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন রোগী ও তার স্বজনরা।

এদিকে হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকায় ভর্তি রোগীদের মধ্যে বারান্দায় অবস্থান করছেন অনেকে। হাসপাতালের ভিতর ও আশপাশের পরিবেশ নোংরা। নেই মশক নিধনের কোনো উদ্যোগ। ডেঙ্গুর পাশাপাশি অন্য রোগীতে ভরা হাসপাতাল। প্রত্যেক রোগীর সঙ্গেই আছেন এক বা একাধিক স্বজন।

সরকার ও মিডিয়ার এত সচেতনতা, প্রচার সত্তে¡ও সরকারি এ হাসপাতালের চিত্র দেখে হতাশ রোগী ও তার স্বজনরা। রোগমুক্তি নয়, তারা এখন ভুগছেন রোগাক্রান্ত হওয়ার শঙ্কায়। শনিবার ও রবিবার সন্ধ্যায় এ হাসপাতালে গিয়ে রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

রোগীর স্বজন ও রোগীরা বলছেন, আমরা এখানে মশারিবিহীন অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছি। মশক নিধনের কোনো উদ্যোগ এ পর্যন্ত আমাদের চোখে পড়েনি। তাই চাইলেও নিজস্ব মশারি টাঙানো যাচ্ছে না। মশারি টাঙানোর মতো ব্যবস্থা থাকলেও হাসপাতাল কতৃপক্ষ দিচ্ছে না মশারি।

এসময় হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে শিশু ওয়ার্ডের ৭টি বেডে, মহিলা ওয়াডের্র (সকল বেড) ও বারান্দার কোনো রোগীকে মশারি দেওয়া হয়নি, মা ওশিশু ওয়ার্ডের তিন জন রোগী ভর্তি থাকলেও তাদের কেউ মশারির দেওয়া হয়নি।

গত চার দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ছাতিয়ানতলার দাতপুর এলাকার সুমাইয়া খাতুন (১৫)। তার মা পারভিনা খাতুন বলেন, মেয়ে নিয়ে খুব কষ্ট করে এখানে আছি। সিট পাইনি।
বারান্দাতেই অবস্থান করছি। বারান্দার বাইরের পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। গত চার দিনে কাউকেই এখানে মশক নিধন দেখিনি। মেয়ের চিকিৎসা চলছে। আগের চেয়ে তার অবস্থা ভালো। কিন্তু আমাদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। আবার এখান থেকেই না নতুন করে এই রোগে আক্রান্ত হই। বারান্দায় অত্যাধিক গরমে ফ্যান নেই, মশারি টাঙানোর ব্যবস্থাও নেই। সন্ধ্যা হলে প্রচুর মশা দেখা যায় হাসপাতালের ভিতরে। এখানে মশার ওষুধ দিয়েও মশা নিধন করা যাচ্ছে না। আর বারান্দা পুরোটাই খোলা। মশার ওষুধ কাজ করে না। তাই আমাদের মধ্যে সব সময় নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয় কাজ করছে।

একই রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হাবুল্যা থেকে ৪ বছরের ছেলে মেহতাজকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তার মা সাগরিকা খাতুন। তিনি বলেন, গত শুক্রবার ছেলেকে নিয়ে ভর্তি আছি। প্রচন্ড গরম এখানে। সারারাত ধরে ছেলেকে পাহারা দিচ্ছি তারপরও মশা নিয়ে আতঙ্কে আছি। এখানের পরিবেশ অনেকটাই নোংরা। হাসপাতাল থেকে আমাদের কোন মশারি দেওয়া হয়নি।

প্রশ্ন উঠেছে কিছু দিন আগে হাসপাতালের প্রত্যেকটা বেডে মশারির ব্যবস্থা ছিল। তাহলে এখন কেন মশারি দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকি না থাকায় এমটা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নার্স নাজমা খানম জানান মশারি পর্যাপ্ত না থাকায় সব বেডে দেওয়া সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আক্তারুজ্জামান তার অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন সব বেডে মশারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মশারির টাঙানোর হুক ও লাগানো হয়েছে।

যশোর জেলা সিভিল সার্জন দিলিপ কুমার রায় সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত মশারির ব্যবস্থা আছে। মশারি কম পড়লে চাহিদা দিলে দেওয়া হবে।

Comments