১৮ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী শিশির ঘোষ বন্দুকযুদ্ধে নিহত

প্রকাশিত: ১০:১২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি: পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে যশোরের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ১৮ মামলার আসামি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শিশির কুমার ঘোষ (৩২)। সে শহরের ষষ্টিতলা পাড়ার নিত্য ঘোঘের ছেলে।

বুধবার ভোরে সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের পুলেরহাট-রাজগঞ্জ সড়কের মহিদিয়ার কাবুলের ইটের ভাটার দক্ষিণপাশে ওই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে সরকারি মুরগীর খামারের সামনে থেকে ৪টি বোমাসহ শিশির ঘোষকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় রাতেই বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়। সে পুলিশের কাছে স্বীকার করে তার কাছে আরো অস্ত্র আছে।

বুধবার ভোরে তাকে নিয়ে ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় শহরতলীর মাহিদিয়ায় অভিযান চালানো হয়। ভোর পৌনে চারটার দিকে মাহিদিয়ার কাবুলের ইটের ভাটার কাছে পৌছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশের কাছ থেকে শিশিরকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য বোমা এবং গুলি ছোড়ে। পুলিশও জীবনরক্ষার্থে পাল্টা দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের গুলিবিনিময় কালে শিশির পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সে সময় সহযোগিদের গুলি মাথার বাম পাশে লাগলে সে গুরুতর জখম হয়। সন্ত্রাসীদের গুলিতে ডিবির কনস্টেবল রোকনুজ্জামান (কং ৮৪৯) এবং গাজী জাহাঙ্গীর (কং ৯৯৩) সামান্য আহত হন। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হোটে যায়। পরে সেখান থেকে একটি ওয়ান স্যুটারগান এবং দুই রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। আহত শিশিরকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় অস্ত্র ও পুলিশের কাজে বাঁধা এবং জখম করার অভিযোগে আলাদা দুইটি মামলা হয়েছে।

ওসি আরো জানিয়েছেন, আসামি শিশিরের বিরুদ্ধে ৪টি হত্যা, অস্ত্র আইনে ৫টি, বিস্ফোরক আইনে ৩টি, চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি, অপহরণ ওধর্ষণ আইনে একটি এবং অন্যান্য আইন আরো ৪টি মামলা আছে। প্রসঙ্গত, শিশির ঘোষ ২০১০ সালের ২৪ জুন চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার এক মুসলিম কিশোরীকে অপহরণ করে মন্দিরে নিয়ে জোর পূর্বক সিঁদুর পরিয়ে বিয়ে করে। এই ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড়া শুরু হয়। এই মামলায় শিশিরের ৪৬ বছরের কারাদ- হয়। তবে কিছুদিন জেল হাজতে আটক থাকার পর উচ্চ আলাধরত থেকে বেরিয়ে আসে শিশির।

২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে টিবি ক্লিনিক মোড়ে চা দোকানি টিপু সুলতানকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনার কয়েকদিন পর ছুটিপুর-এড়েন্দা রোডে বন্দুকযুদ্ধের শিশির ও তার সহযোগি রাব্বি ইসলাম শুভকে অস্ত্র-গুলিসহ আটক করে পুলিশ। সে সময় শিশিরের একটি পায়ে গুলি লাগে এবং সে পঙ্গু হয়ে যায়। এক পা হারিয়েও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে সরে যায় নি সে। মাস তিনেক আগে চাঁদা না পেয়ে ষষ্ঠিতলা এলাকার একটি বাড়ির ভাড়াটিয়ার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে। চাঁদা না দেয়ার ভাড়াটিয়ার স্ত্রীর সভ্রমহানির চেষ্টা করে সে। বাঁধা দেয়ায় ওই দম্পতিকে মারপিট করে।

শিশিরের বড় ভাই প্রদীপ ঘোষ ২০১২ সালের ২৭ জুলাই বোমা তৈরীকালে বিস্ফোরিত হয়ে মারা যান। সেও চিহ্নিত সস্ত্রাসী ছিল।

Comments