যশোরে ছোট বাবু খুনের মোটিভ উদঘাটন, আটক ৫ জনের স্বীকারোক্তি

প্রকাশিত: ৮:৩৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি:  যশোরে নূর জামাল ওরফে ছোট বাবু (২৪) খুনের মোটিভ উদঘাটন হয়েছে। এই হত্যা মিশনে অংশ নেয় ৬ জন। তার মধ্যে ৫ জনকে আটকের পর তারা খুনের বর্ণনা দিয়েছে।

ফেনসিডিল সেবনের কথা বলে ডেকে নিয়ে তারা ছোট বাবুকে খুন করে।  তাদের স্বীকারোক্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আটককৃতরা হলো ঝিকরগাছার মোবারকপুর গ্রামের আব্দুর রউফ ওরফে বাবলু ডাক্তারের ছেলে তাজরিয়ান মাহমুদ তুর্য্য (১৯), ইমরান রেজা খোকনের ছেলে তাহজীবুল বিশ্বাস অক্ষর (২০), মল্লিকপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম (১৯), মোবারকপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আবু জাফর (১৯) ও কামরুল ইসলামের ছেলে শাহিন হোসেন (২০)।

তারা খুনের দায় স্বীকার করে শুক্রবার সকালে যশোরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে।

এদিন দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সালাউদ্দিন সিকদার। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) জুয়েল ইমরান, ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহমদ, শার্শা থানার ওসি মশিউর রহমান প্রমুখ।

প্রেস বিফিংয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ছোট বাবুর পিতা নজর আলী একসময় ঝিকরগাছার রেলস্টেশনের কোয়ার্টারে বসবাস করতেন। ৬/৭ বছর আগে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে বিচ্ছেদ হওয়ার পর নজর আলী সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার মাঝিপাড়া গ্রামের চলে যায়। ছোট বাবুও পিতার সাথে সেখানে চলে যায়। কিন্তু সে মাদক সেবনের জন্য প্রায় ঝিকরগাছায় আসতো।

মাদক সেবনের পর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতো। ছোট বাবু প্রায় সময় বন্ধু তুর্য্যরে মোটরসাইকেলটি নেয়ার বায়না করতো। না দেয়ায় টাকা চায়তো। ছোট বাবুর একবার মোটরসাইকেল নিতে পারলে আর ফিরে পাবেনা এটা নিশ্চিত ছিলো তুর্য্য।

কেননা ছোট বাবুর স্বভাব চরিত্র মোটেও ভালো ছিলোনা। এই কারণে অপর বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করে তুর্য্য তাকে খুনের পরিকল্পনা করে।

সেই অনুযায়ী তুর্য্য ৩০ জুলাই ছোট বাবুকে সাতক্ষীরা থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর আসামি সাজ্জাদের পরিকল্পনায় দু’টি মোটরসাইকেলে করে ছোট বাবুসহ ৬জন বেনাপোলে যায় ফেনসিডিল সেবনের জন্য।

গোগার কালীয়ানি গ্রামের জাফর আলীর জমিতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তুর্য্য ও পরে সাক্ষর দুইটি চাকু দিয়ে তার শরীরে ১৪টি আঘাত করে। পরে তার মরদেহ ফেলে তারা ঝিকরগাছায় চলে আসে।

প্রেস বিফিংয়ে আরো জানানো হয়, ছোট বাবুর মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয় মরেদেহের পকেট থেকে। পাশ থেকে দুইটি চাকুও উদ্ধার করে। পরে তার নম্বর ট্রাকিং করে তুর্য্য, সাক্ষর ও সাজ্জাদুলের অবস্থান জানতে পারে।

৩১ জুলাই ঝিকরগাছা রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক জাফর ও শাহিনকে আটক করা হয়। খুনের সাথে আলআমিন নামে আরো একজন জাড়িত। তাকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Comments