ঝিনাইদহে বিশেষ বরাদ্দের ধান কারা দিচ্ছে?

প্রকাশিত: ৮:০৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০১৯

বিশেষ প্রতিবেদক: ঝিনাইদহে বিশেষ বরাদ্দের ধান কৃষকদের কাছ থেকে না কিনে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে কেনার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি উপজেলায় কৃষকদের তালিকা করা হলেও তাদের ঘরে ধান না থাকায় কতিপয় দালাল বাজার থেকে কম দামে ধান কিনে ন্যায্য মুল্যে গুদামে বিক্রি করছে।

এই সিন্ডিকেটে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ইউএনও অফিস জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গুদামে জায়গা নেই। ধান কিনে রাখার মতো বস্তা সংকট রয়েছে প্রতিটি গুদামে। সবচে বড় বিষয় হচ্ছে মধ্য শ্রাবণ মাসে শতকরা ৯০ ভাগ কৃষকে ঘর খাওয়া ধান ছাড়া আর কোন ধান নেই। অথচ বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকের কৃষিকার্ড ও ভোটার আইডি সংগ্রহ করে তাদের নামেই ধান সরবরাহ করা হচ্ছে।

সাধুহাটী ইউনিয়নে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান, তার ঘরে ধান ছিল না। কিন্তু তার দিয়ে একাউন্ট খুলে তার কৃষিকার্ড ও ভোটার আইডি ব্যবহার করে বৈডাঙ্গার এক ব্যবসায়ী ধান সরবরাহ করেছেন। ওই কৃষককে দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার টাকা। এভাবে প্রতিটি গ্রামেই কৃষকের নাম তালিকাভুক্ত করে মধ্যস্বত্বভোগীরা গুদামে ধান সরবরাহ করছেন।

হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ধানের বরাদ্দ ভাগাভাগী করে নেওয়া হয়েছে। মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ওসিএলএসডিগন যোগসাজস করে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে ধান কিনছেন এমন অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাকিব সাদ সাইফুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, জেলার গুদামগুলোতে ধান রাখার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। নেই বস্তা। তারপরও বিশেষ বরাদ্দের ধান কিনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, জেলায় বস্তা দরকার এক লাখ দশ হাজার। কিন্তু গতকাল বুধবার পর্যন্ত বস্তার বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ২০ হাজার। বিশেষ বরাদ্দের ধান কেনার টার্গেট পুরণ হবে বলেও তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় বিশেষ বরাদ্দের ধান কেনা হচ্ছে ৫৯৫০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ১৭৬৩ মেট্রিক টন, শৈলকুপায় ১১৩৯ মেট্রিক টন, হরিণাকুন্ডুতে ৭২৮ মেট্রিক টন, কোটচাঁদপুরে ৪৬৯ মেট্রিক টন, মহেশপুরে ৯৩৯ মেট্রিক টন ও কালীগঞ্জ উপজেলায় ৯১২ মেট্রিক টন। এই ধান কেনা আগামী ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত চলবে।

বিশেষ বরাদ্দের ধান প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে কেনা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাকিব সাদ সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা সাধারণত কৃষকের কৃষিকার্ড, ভোটার আইডি ও তালিকাগুলো সঠিক আছে কিনা দেখি। তারপরও কোন বত্যায় ঘটলে বা কেও অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Comments